ঘুরতে যাওয়ার সময় অনেকে বিলাসবহুল হোটেলে থাকতে পছন্দ করেন, অনেকে আবার থাকার জায়গা হিসাবে বেছে নেন কম খরচের হোটেল। কিন্তু কম খরচে থাকার জন্য হোটেলের ঠিকানা খুঁজতে গিয়ে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন ভ্রমণপিপাসু হেই মাও জং।
হেই মাও চিনের বাসিন্দা। ঘুরে বেড়ানোর শখ তার। সেই সূ্ত্রে অনলাইনে হোটেলের সন্ধান করছিলেন তিনি। তখনই এক ‘মাইক্রো হোটেল’ খুঁজে পান তিনি। মধ্য চিনের হুনান প্রদেশে রয়েছে এই হোটেল।
ছবি দেখে হেই মাও অনুমান করতে পারলেন যে, এই হোটেলের ঘরগুলি এক জন থাকার মতো। হোটেলের প্রতিটি ঘর এতটাই ছোট যে দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া যায় না। নতুন ধরনের হোটেল দেখে আগ্রহ বাড়ে তার।
তিনি ভেবেছিলেন যে, এমন বিরল ধরনের হোটেলে থাকার খরচ নিশ্চয়ই খুব বেশি হবে। কৌতুহলের বশে হোটেলে এক দিন থাকার ভাড়া দেখলেন তিনি।
এক দিন কাটানোর জন্য এই ঘরের ভাড়া দেখাচ্ছিল ৬০ ইয়ুয়ান। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য মাত্র ৭১২ টাকা। এত কম ভাড়া দেখে আর নতুন অভিজ্ঞতা নিতে মাইক্রো হোটেলের ঘর এক দিনের জন্য বুক করে ফেলেন হেই মাও।
ভিডিওর মাধ্যমে ভ্লগ তৈরি করা তার পেশা। তাই ঘরের ভিতরের সাজসজ্জা বাকিদের সামনে তুলে ধরার জন্য ছবি এবং ভিডিও তুলতে শুরু করলেন তিনি।
হেই মাও তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘‘মাইক্রো হোটেলের প্রতিটি ঘর আট বর্গমিটার জায়গা নিয়ে করেছে। হোটেলে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে দেখলাম আমার সামনে একটি লম্বা বারান্দা। বারান্দার দু’পাশে সারি দিয়ে খুপরির মতো অনেক ঘর রয়েছে। এক ঝলক দেখলে মনে হবে যেন একটি ফ্ল্যাটকে ছোট ছোট ৫-৬টি টুকরোয় ভেঙে ফেলা হয়েছে।’’
তিনি জানান, মাইক্রো হোটেলের ঘরগুলির ভিতরে সবকিছুই রয়েছে। বিছানা থেকে শুরু করে শৌচালয়— কোনো কিছুই বাদ নেই ঘরের ভিতর।
কিন্তু হোটেলের ঘরে ঢুকে যা দেখলেন, তা দেখে রীতিমতো অবাক তিনি। ঘরের ভিতরে তিনি দেখেন যে, বিছানার ঠিক পাশেই রয়েছে কমোড এবং কমোডের উপর রাখা রয়েছে জলের বোতল, শরবতের বোতল, গ্লাস প্রভৃতি। হোটেলের ঘরে আলাদা করে শৌচালয় নির্মাণ করা হয়নি। বেডরুম, বাথরুম এমনকি ডাইনিং রুম সব এসে জুটেছে আট বর্গমিটারের ওই ঘরটিতে।
এ ছাড়াও মাইক্রো হোটেলের ঘরে রয়েছে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, মুখ ধোয়ার বেসিন, আয়না, চা রাখার পাত্র এবং কোট ঝোলানোর হ্যাঙ্গার-সহ আরো অনেক খুটিনাটি জিনিস।
তার দাবি, বিছানার একদম পাশে কমোড রাখার প্রয়োজন ছিল না। এত কাছে কমোড থাকার জন্যই ঘরের ভিতর সবসময় একটা বাজে গন্ধ পাচ্ছিলেন তিনি। তাই তিনি ৩ ঘণ্টা থাকার পর বেরিয়ে আসেন।
মাইক্রো হোটেলের পাশে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকার কারণে রোগীর বাড়ির লোক বা অনেক সময় রোগীরাও এসে থাকেন এই ঘরগুলিতে। বহু ছাত্রছাত্রী আবার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতেও এই হোটেলের ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন হোটেল মালিক।