ভারত সীমান্তে যুদ্ধের ঝুঁকি

চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত সীমান্তে সশস্ত্র সংঘাতের ঝুঁকি বহাল রয়েছে। চীন সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর শক্তিবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সংঘাত শুরু হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে মার্কিন হস্তক্ষেপের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে কাশ্মিরে সম্ভাব্য অস্থিরতার জবাবে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। খবর দ্য ওয়্যার, এএনআই।
নরেন্দ্র মোদির আমলে কাশ্মিরে সামরিক প্রত্যাঘাতের সম্ভাবনা প্রবল, বলছে মার্কিন প্রতিবেদন

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর গোপনীয় তথ্যের ভিত্তিতে ‘অ্যানুয়েল থ্রেট এসেসমেন্ট অব দ্য ইউএস ইন্টেলিজেন্স কমিউনিটি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রস্তুত হয়ে থাকে। প্রতিবেদনের চলতি বছরের সংস্করণটি বৃহস্পতিবার প্রকাশ হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য মতে, চলতি বছরের থ্রেট এসেসমেন্ট প্রতিবেদনের গোপনীয় অংশের মূল ফোকাস হয়ে আছে চীন। মার্কিন প্রভাব-প্রতিপত্তি খর্ব করতে দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার প্রয়াস অব্যাহত রাখবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।

নিয়মিত প্রকাশিত থ্রেট এসেসমেন্ট প্রতিবেদনের প্রকাশ্য অংশের কিছু বিষয় প্রতিবছর ঘুরে ফিরে আসে। তবে এবার প্রকাশ্য অংশেও চীন বিষয়ক আলোচনা আগের চেয়ে বিস্তৃত হয়েছে, যা দেশটির ওপর মার্কিন গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের বাড়তি মনোযোগের প্রতিফলন মনে হচ্ছে।

এবারের প্রতিবেদনে ‘সম্ভাব্য আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘাত’ অনুচ্ছেদে ভারত ও চীনের মধ্যে ২০২০ সালের গালওয়ান সীমান্ত সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, উভয় দেশ বিরোধপূর্ণ সীমান্তে সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে। অতীতে সেখানে ছোটখাট বিরোধ খুব দ্রুত বড় আকার নিতে দেখা গেছে। দুই পারমাণবিক শক্তি ভারত ও চীনের মধ্যে সম্ভাব্য যে কোনো সংঘাত মার্কিন স্বার্থের জন্য গুরুতর হতে পারে এবং মার্কিন হস্তক্ষেপের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।

ভারত-পাকিস্তান প্রসেঙ্গ বলা হয়েছে, পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে ভারতবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। পাকিস্তানের দিক থেকে প্রকৃত উসকানি অথবা পাকিস্তানের বলে মনে হওয়া যে কোনো উসকানির জবাবে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের ঝোঁক অতীতের যে কোনো সময়ের চাইতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের বেশি। কাশ্মিরে সহিংস অস্থিরতা অথবা ভারতে কোনো জঙ্গি হামলা সম্ভাব্য ফ্ল্যাশপয়েন্ট হয়ে উঠতে পারে।

এদিকে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের কেউ কেউ পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের প্রবল আশঙ্কা করছেন। বিশেষত আগামী বছর ভারতে সাধারণ নির্বাচন থাকায় এমন আশঙ্কার কথা বলছেন তারা।

ভারতের রাজ্যসভা এমপি জওয়াহার সরকার মার্কিন প্রতিবেদনের লিঙ্ক পেস্ট করে টুইটারে লিখেছেন, ‘আরেকটি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ? মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য বলছে সামরিক পাল্টা জবাবের সম্ভাবনা প্রবল। কামনা করছি এটা মিথ্যা হোক। তবে মোদি যেভাবে ২০২৪ সালে জিততে মরিয়া, তাতে যে কোনো কিছু ঘটতে পারে। গোধরা, আন্না হাজারে, পুলওয়ামা সবকিছুই অকষ্মাৎ এসেছিল মোদিকে সাহায্য করতে।