দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন নিখোঁজ সৌদি ইমাম!

সৌদি আরবের বিনোদন শিল্পের সংস্কার নিয়ে সমালোচনা করায় প্রখ্যাত সৌদি ইমাম ইমাদ আল মুবায়েদকে সৌদি কর্তৃপক্ষ আটক করেছিল বলে আশঙ্কা করেছিলেন মানবাধিকার কর্মীরা। তবে সর্বশেষ খবরে জানা যাচ্ছে, আল মুবায়েদ নিজ দেশ ছেড়ে পালিয়ে নিরাপদ কোনো দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। ৮ মার্চ, মঙ্গলবার ইমাদ আল মুবায়েদ তার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এই ঘোষণা দিয়েছেন। খবর দ্য নিউ আরব।

সৌদি ইমাম এবং ধর্ম প্রচারক ইমাদ আল মুবায়েদ তার টুইটারে পোস্ট করা একটি বার্তায় বলা হচ্ছে, তাকে আটক করা হয়নি। তবে তিনি সৌদি আরব ছেড়ে নিরাপদ একটি দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, তিনি দাম্মামের কিং আব্দুল আজিজ মসজিদের ইমাম ছিলেন।

তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘আল্লাহর রহমতে, আমি দেশ ছেড়ে একটি নিরাপদ দেশে পৌঁছাতে পেরেছি। সব প্রশংসা আল্লাহর।’

১ মার্চ আল মুবায়েদ তার টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। তিনি ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের আল্লাহকে ভয় করার পরামর্শ দেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, সৌদি আরবে সংস্কারের নামে সম্প্রতি যেসব পরিবর্তন করা হচ্ছে তা ইসলাম পরিপন্থী। এগুলো মানুষের ইসলামি বিশ্বাসকে মুছে ফেলছে।

ভিডিওতে তিনি বাদশাহ সালমান, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং অথরিটি ফর এন্টারটেইনমেন্টের প্রধান তুর্কি আল শেখকে সম্বোধন করে তাদের প্রতি ইসলামি মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘এই দেশটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্বাসের ভিত্তিতে এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর দ্বীনের প্রতিষ্ঠা ও প্রয়োগের ভিত্তিতে। অথচ আজ যা ঘটছে তা দেশটির ভিত্তির বিপরীত।’ ভিডিওটি ১৬ লাখের বেশি মানুষ দেখেছেন। আর এই ভিডিওটির জন্যই তাকে আটক করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছিল।

অবশ্য পরের দিন আল মুবায়েদ একটি নতুন ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে তাকে সৌদি শাসকদের প্রশংসা করতে দেখা গেছে। তবে মানবাধিকার কর্মীরা আশঙ্কা করেছিলেন, তাকে জোর করে নতুন এই বিবৃতি দিতে বাধ্য করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

৬ মার্চ, সোমবার টুইটারে #হোয়ার ইজ ইমাদ মুবায়েদ হ্যাশট্যাগটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়। এর আগে সৌদি কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছিল, সাইবার অপরাধ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে একজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

তবে আটক ব্যক্তি আল মুবায়েদ কিনা তা যাচাই করতে পারেনি লন্ডনভিত্তিক অনলাইন পত্রিকা দ্য নিউ আরব। পত্রিকাটি এই বিষয়ে লন্ডনে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসের কাছেও জানতে চেয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া পায়নি।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবের মতো রক্ষণশীল দেশে আগে সিনেমা, কনসার্টের মত বিনোদন নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তার ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দেশটিকে পশ্চিমা সংস্কৃতির জন্য উন্মুক্ত করে দেন। তবে যেসব সৌদি ইমাম তার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বা রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, আটক করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রদ্রোহ বা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।