বিশ্বব্যাপী ব্যাংকগুলোর সুদ হার বৃদ্ধি এবং আর্থিক মন্দার আশঙ্কা থেকে বেড়েই চলছে সোনার দাম। বর্তমানে সোনার বাজারে দামের যে উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সেটি থেকে যাবে এবং এ বছরই বিশ্ববাজারে মহামূল্যবান এ ধাতুর মূল্য প্রতি আউন্স ২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত রোববার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।
বিশ্লেষক এবং শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ মানুষ মূল্যস্ফীতি এবং অস্থিতিশীল অর্থনীতির যুগে নিরাপদ বিনিয়োগের উপায় খুঁজছেন। আর এ কারণে বর্তমানে সোনার বার, কয়েন এবং গহনার চাহিদা অনেক বেড়েছে।
ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েল ম্যানেজমেন্ট নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ওয়েন গর্ডন বলেছেন, ‘আমার ধারণা এ বছর সোনার দাম প্রতি আউন্স ২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘ডলার দুর্বলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আর তাই ডলারের বিপরীতে সোনা এখন উত্তম বিকল্প।’
ডলার ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বন্ডের চাহিদা কমায় গত পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবারের মতো গত শুক্রবার আবারও বৃদ্ধি পায় সোনার দাম।
এদিন প্রতি আউন্স স্পট সোনার দাম ১ হাজার ৮৪৫.৮৪ ডলার পর্যন্ত পৌঁছায়। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। অপরদিকে নিউইয়র্কে প্রতি আউন্স ইউএস গোল্ড ফিউচার্সের দাম ১ হাজার ৮৫৩.৭০ ডলার স্পর্শ করে।
সর্বশেষবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ডলারের কাছাকাছি গিয়েছিল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ওই সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সোনার বাজারে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। আর এ বছরের জানুয়ারিতে এই হলদে ধাতুর দাম ১ হাজার ৮৬০ ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৯৬০ ডলারে গিয়ে ঠেকেছিল।
বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ সোনা
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতার কারণে সোনা বিনিয়োগকারীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে একটি অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে এ গুরুত্ব আরও বেড়েছে।
মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডস নামক প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক পরিচালক শ্যামলাল আহমদ সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমসকে বলেছেন, তার ধারণা সোনার দাম শুধু বাড়তেই থাকবে। কারণ সোনা সবসময়ই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিরাপদ্।
তিনি জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের শুরুর মাসগুলোতে সোনার বেঁচা-কেনা বেশ ভালোই চলছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, সোনার ব্যবসা এ বছর ভালো যাবে বলে প্রত্যাশা তাদের। কারণ সামনে উৎসবের মৌসুম আসছে।