ভুক্তভোগী ছেলে না হয়ে মেয়ে হলে শাস্তি ভিন্ন হতো : নির্যাতিতের মা

যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোতে ১৩ বছরের এক কিশোরকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ৩১ বছর বয়সী এক নারীর বিরুদ্ধে। এতে অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়েন আন্দ্রেয়া সেরানো নামের ওই নারী। গতবছর ভুক্তভোগী কিশোরের মায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। সেসময় নিজের অপরাধ স্বীকারও করে নেন। তবে বর্তমানে আন্দ্রেয়া জেলের বাইরেই আছেন।

আন্দ্রেয়ার বিরুদ্ধে মূলত দু’টি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথমটি বিশ্বাসভঙ্গ এবং দ্বিতীয়টি, নাবালকের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ। গত বছরের জুনে তাকে গ্রেপ্তার করার পর তিনি ওই কিশোরের সঙ্গে যৌনতার কথা স্বীকার করেছিলেন। এবং সেসময়ই জানা যায় তিনি অন্তঃসত্ত্বা। এরপরই জুলাইয়ে ৭০ হাজার মার্কিন ডলারের বিনিময়ে জামিন পান আন্দ্রেয়া।

জানা যায়, আন্দ্রেয়ার আইনজীবীরা সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে একটি সমঝোতায় এসেছেন। এর ফলেই ‘যৌন অপরাধী’ হিসেবে অভিহিত করা হলেও জেলে থাকতে হবে না। তকমা দেওয়া হলেও হাজতবাস করতে হবে না। সেই হিসেবেই আপাতত বাইরে রয়েছেন আন্দ্রেয়া। ইতোমধ্যেই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। শিশুটি তার কাছেই আছে।

তবে সন্তানের নির্যাতনকারীর এমন বিচারহীনতায় ক্ষুদ্ধ ভুক্তভোগী কিশোরের মা। তিনি বলেন, “আমার ছেলের কাছ থেকে ওর শৈশব ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওর ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছে। এটা মেনে নিয়েই ওকে পুরো জীবন কাটাতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমার শুধু মনে হচ্ছে, ওই নারী যদি একজন পুরুষ হতেন আর আমার সন্তান যদি মেয়ে হতো তাহলে পরিস্থিতি পুরোই ভিন্ন হতো। তারা সমঝোতায় এসে ওই নারীকে মুক্ত করে দিয়েছে। কারণ আমার সন্তান মেয়ে নয়, এমননি ওদের মধ্যেও কেউ না। আইনজীবিরা নারী বলে তাকে নমনীয় চোখে দেখছে।”

ওই মা আদালতে বলেন, “আন্দ্রেয়া আমার ১৩ বছরের শিশু সন্তানের ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। তার হাতে মাদক তুলে দিয়েছে। আমি তার কারাবাস চাই।”

তিনি বলেন, “এটি একটি দ্বিমুখী আচরণ। যদি নির্যাতনকারী পুরুষ হতো, আর ভুক্তোভোগী নারী হতো তাহলে সে এখন জেলের ভেতরই থাকতো।”

যদিও শেষ পর্যন্ত মামলাকারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধের আদালতের সিদ্ধান্ত আসে। জামিন মঞ্জুর করে আগামী ১৮ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আন্দ্রেয়ার ১০ বছরের জেল হতে পারে।

জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই কিশোর এবং নারী একই সঙ্গে বসবাস করছিলেন। ভুক্তোভোগীর মা জানান, আন্দ্রেয়াকে নিজের মায়ের মতোই দেখতো ওই কিশোর। এমনকি আগে মা বলেও ডাকতো তাকে। কিন্তু কিভাবে দুজনের পরিচয় বা দুজনের মধ্যকার সম্পর্ক কী তা জানা যায়নি। এদিকে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন আন্দ্রেয়া। শিশুটি তাঁর কাছেই রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে কিশোরের মায়ের অভিযোগ, ‘আমার ছেলের থেকে ওর শৈশবই চুরি করে নেওয়া হয়েছে। এই বয়সেই ও বাবা হয়ে গিয়েছে। ও একজন আক্রান্ত। বাকি জীবনটা ওকে এই সত্য়িটা নিয়েই বাঁচতে হবে।’

তার অভিযোগ, আন্দ্রেয়াকে ‘মা’ বলেই ডাকত কিশোরটি।