ভূমিকম্প : তুরস্ক-সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ২৪ হাজার

গত কয়েক দশকের ভয়াবহতম ভূমিকম্পের পর গত ৫ দিনে তুরস্ক ও সিরিয়া থেকে উদ্ধারকৃত মৃতদেহের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ২৪ হাজারে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দুই দেশের সরকারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এ পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়া থেকে মোট ২৩ হাজার ৭১৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

এই ২৩ হাজার ৭১৩ জনের মধ্যে তুরস্ক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০ হাজার ২২৩ জনের মরদেহ এবং সিরিয়া থেকে উদ্ধারকৃত মরদেহের সংখ্যা ৩ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে।

ADVERTISEMENT

৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে অনেকগুলো আফটারশক হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাশ প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।

বিধ্বংসী সেই ভূমিকম্পের পরপরই ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করেন তুরস্ক ও সিরিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের উদ্ধারকর্মীরা। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিভিন্ন দেশের উদ্ধারকারী সদস্যরাও।

উপদ্রুত বিভিন্ন শহরে দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা; কিন্তু বিপর্যয়ের ব্যাপকতা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজের কোনো কূল-কিনারা করা যাচ্ছে না। এখনও তুরস্ক ও সিরিয়ার বিভিন্ন শহরের ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে আছেন শত শত হতাহত। তাদের মধ্যে যারা বেঁচে আছেন, শিগগির উদ্ধার না পেলে মৃতের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বাড়বে।

তুরস্কে উদ্ধারকাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তীব্র ঠান্ডা, বৃষ্টি, যোগাযোগে বিপর্যয়সহ নানা সমস্যা। আশ্রয়, খাবার, পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুতের অভাবে চরম দুর্দশায় রয়েছেন উপদ্রুত এলাকাগুলোর বেঁচে থাকা মানুষেরা। ফলে তাঁদের মধ্য থেকেও অনেকের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

পাশের দেশ সিরিয়ার অবস্থা আরও খারাপ। দেশটির ভূমিকম্পকবলিত এলাকাগুলো সরকার ও বিদ্রোহী—দুই পক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহায়তা পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সহায়তা নিয়ে জাতিসংঘের ছয়টি ট্রাক তুরস্ক সীমান্ত পার হয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করেছে। এটি দেশটির উপদ্রুত অঞ্চলে পৌঁছানো প্রথম আন্তর্জাতিক সহায়তা।