তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ইতোমধ্যে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজারের কোটা ছুঁইছুঁই করছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তুরস্কে মৃত্যু তিন হাজার ছাড়িয়েছে। আর সিরিয়ায় এই সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ধারণা করছে, ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছতে পারে ২০ হাজারে।
ভূমিকম্পে ঘটনায় আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। এসব মানুষের বেশির ভাগই ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারে উদ্ধারকর্মীদের অভিযান চলছে। খবর বিবিসির
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খারমানমারাসের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। এর গভীরতা ভূপৃষ্ঠে থেকে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটারে।
এরপর সোমবার দুপুরে ও বিকালে আরও দুইবার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরমধ্যে তুরস্কের স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে ৭.৬ মাত্রার তীব্র ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে জানায় তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রেসিডেন্সি (এএফএডি)।
আর বিকেলে ৬ মাত্রার আরও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প তুরস্কের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ ইউএসজিএস।
এদিকে তুরস্কের ভূমিকম্প দুর্গত এলাকায় আগামী কয়েক দিন ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিবিসি। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দুর্গত এলাকায় দিনের তাপমাত্রা ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকবে এবং রাতের বেলা তা আরো কমে যেতে পারে। এছাড়া ওই এলাকা ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটার গভীর তুষারে ঢেকে যেতে পারে বলেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। তুরস্কের উত্তরের পাহাড়ি এলাকায় বেশি তুষারপাতের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে ৫০ থেকে ১০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষারপাত হতে পারে।
তুর্কি সেনাবাহিনীসহ হাজার হাজার উদ্ধারকর্মী দিনরাত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত তুরস্কে ৭ হাজারের বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
বিধ্বস্ত ভবনের নিচ থেকে এখনও আসছে বাঁচার আকুতি। এসব ভবন এতটায় ধ্বংস হয়েছে যে তাদেরকে উদ্ধারে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। বাঁচার আকুতি শুনতে পেলেও অনেকের কাছে পৌঁছতে পারছেন না তারা।
বিভিন্ন দেশের সেনা ও উদ্ধারকারী বাহিনী তুরস্কে পৌঁছেছে এবং অনেক দেশের বাহিনী রওনা করেছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় সহায়তা নিয়েও হাজির হচ্ছে অনেক দেশ।