হুমায়ূনের সম্বন্ধে একটা কাহিনী প্রচলিত আছে যে একবার তিনি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল। তার বাবা বাবর হুমায়ূনের পালঙ্ক ঘিরে তিনবার পরিভ্রমণ করে প্রার্থনা করেন, ‘হে খোদা, যদি জীবনের বদলে জীবন দেয়া যায়, তাহলে আমি বাবর, আমার পুত্র হুমায়ূনের জীবনের বদলে নিজের জীবনদান করতে প্রস্তুত।’
হুমায়ূনের বোন গুলবদন বেগম ‘হুমায়ূননামাতে’ লিখেছেন ‘সেদিন থেকেই বাবর (পিতা) অসুস্থ হয়ে পড়লেন আর হুমায়ূন সুস্থ হয়ে উঠতে লাগলেন। একটা সময়ে বাবর পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়লেন। সম্ভাল থেকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হল হুমায়ূনকে।’
হুমায়ূন তার বাবার মৃত্যুর চার দিন আগে আগ্রা পৌঁছন। বাবর তার সব সেনাপতিকে এক জায়গায় ডেকে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছিলেন যে হুমায়ূনই হবেন তার উত্তরাধিকারী। যেভাবে সেনাপতিরা বাবরের প্রতি খেয়াল রাখেন, সেই একইভাবে যেন তারা হুমায়ূনকেও আগলে রাখেন।
আবার হুমায়ূনকেও শিক্ষা দিয়েছিলেন যে তিনি যেন প্রজাদের আর নিজের ভাইদের দিকে খেয়াল রাখেন আর তাদের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে শাসনকাজ পরিচালনা করেন।
ইব্রাহিম লোদির বিরুদ্ধে যুদ্ধ
হুমায়ূনের জন্ম ১৫০৮ সালের ৬ মার্চ কাবুলে। যখন তিনি মসনদে বসলেন তখন তার বয়স মাত্র ২৭ বছর। ওইটুকু বয়সেই তার ভালো, খারাপ সব গুণই সামনে চলে এসেছিল। সেইসব দোষ গুণগুলো চিরজীবনই তার সঙ্গী থেকেছে। এর ফলে কখনো তিনি সফল হয়েছেন, আবার কখনো ডুবে গেছেন গভীর হতাশায়।
মাত্র ১২ বছর বয়সে হুমায়ূনকে একটা প্রদেশের দায়িত্ব দিয়ে দেন আর ১৭ বছর বয়সে যখন ভারত অভিযান শুরু করলেন বাবর তখন তাতেও বাবার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছিলেন হুমায়ূন।
বাবর তার আত্মজীবনী ‘বাবরনামা’তে লিখেছেন, ‘আমি হিসার ফিরুজার গভর্নরের নেতৃত্বে হুমায়ূনকে পাঠিয়েছিলাম ইব্রাহিম লোদির সামনের সারির সৈন্যদের মোকাবিলা করতে। সে যখন লোদির সৈন্যদের পরাস্ত করতে সক্ষম হল, তাকে উপহার হিসেবে হিসার ফিরুজা জায়গীরটাই দিয়ে দিয়েছিলাম।’
বাবর লিখেছেন, ‘পানিপথের যুদ্ধ জয়ের পর তাকে আমি পাঠাই আগ্রার দখল নিতে। গোয়ালিয়রের রাজার পক্ষ থেকে তাকে একটা বড় হীরা উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছিল। ওই হীরা এতই দামী ছিল যে সেই অর্থ দিয়ে গোটা পৃথিবীর সব মানুষকে আড়াই দিন খাওয়ানো যেত। আমি যখন আগ্রা পৌঁছাই, আমার ছেলে সেই হীরাটা আমাকে নজরানা হিসেবে দেয়। কিন্তু আমি সেটা তাকেই ফিরিয়ে দিই।’
কম ইচ্ছাশক্তি
বাবরের মৃত্যুর সময়ে মুঘল সাম্রাজ্য এতটাই নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল যে তিন দিন ধরে তার মৃত্যুর খবর বাইরের কাউকে জানানোই হয়নি। আর হুমায়ূন শাসনভার নেন ১৫৩০ সালের ৩০ ডিসেম্বর।
ইতিহাসবিদ এস এম বার্কে তার বই ‘আকবর, দা গ্রেটেস্ট মুঘল’-এ লিখেছেন, ‘ঘোড়া ছোটানো বা তীরন্দাজ হিসেবে হুমায়ূন পারদর্শী ছিলেন ঠিকই, কিন্তু যুদ্ধজয়কে আরো মজবুত করার ব্যাপারে তার ইচ্ছাশক্তির অভাব ছিল। নেতৃত্ব দেয়ার প্রতিভারও খামতি ছিল তার মধ্যে। এই জন্যই খুব কাছের মানুষরাও হুমায়ূনকে ছেড়ে দূরে সরে গেছেন নানা সময়ে, অথচ সেই সময়গুলোতেই হুমায়ূনের তাদের খুব প্রয়োজন ছিল। আবার সামনে কোনো বাধা এলে ভয় না পেয়ে তা অতিক্রম করার ক্ষমতাও ছিল হুমায়ূনের।’
সম্রাট হিসেবে তার প্রথম যুদ্ধ অভিযান ছিল ১৫৩১ সালে। জৌনপুরের কাছে মাহমুদ লোদিকে সেই যুদ্ধে পরাস্ত করেন হুমায়ূন। আর শের শাহের ক্রমবর্ধমান শক্তির মোকাবেলা করার জন্য হুমায়ূনকে পূর্বদিকে অভিযান চালাতে হয় ১৫৩৪ সালে। কিন্তু বাহাদুর শাহের বিপদ থেকে নিজের মসনদ রক্ষা করার জন্য মাঝপথেই তাকে ফিরে আসতে হয়।
এর ফলে শের শাহের ক্ষমতা আগের থেকেও বেড়ে যায়। আর হুমায়ূন ওই বছরই পাড়ি দেন মালওয়া আর গুজরাটের দিকে।
চৌসার যুদ্ধে পরাজয়
তবে হুমায়ূন শের শাহের মুখোমুখি হন আরো কয়েক বছর পরে। ১৫৩৭ সালে। ওই বছরের মার্চ মাসে শের শাহকে কব্জায় আনার জন্য হুমায়ূন পূর্ব ভারতের দিকে রওনা হন। বাংলার রাজধানী গৌড় দখলও করেন হুমায়ূন।
সেই সময়ের নামকরা ইতিহাসবিদ জোহর আফতাবচি তার বই ‘তজকিরাৎ-উল-ওকিয়ৎ’-এ লিখেছেন, ‘গৌড় দখল করার পরে হুমায়ূন একটা বড় সময়ের জন্য নিজের হারেমে কাটান। সেই সময়ে তিনি একেবারেই বাইরে বের হতেন না। এই সুযোগে শের শাহ বেনারস আর জৌনপুর দখল করে ফেলেন। এরপরে হুমায়ূন যখন রাজধানীর দিকে ফিরতে শুরু করেন, মাঝপথেই তাকে আটকে দেন শের শাহ।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘১৫৩৯ সালের ৭ জুন চৌসার যুদ্ধে পরাজিত হন হুমায়ূন। ওই লড়াইতে তিনি নিজে যুদ্ধে নেমেছিলেন। তার হাতে একটা তীর বিঁধে গিয়েছিল। তিনি আদেশ দিয়েছিলেন অন্য সৈনিকদের এগিয়ে যেতে, কিন্তু একজনও সেই নির্দেশ পালন করেনি। নিজের প্রাণ বাঁচাতে হুমায়ূনকে লড়াইয়ের ময়দান থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছিল। গঙ্গা পেরনোর সময়ে প্রবল স্রোতে তার ঘোড়া ভেসে যায়। সেই সময়ে একজন তার প্রাণ বাঁচায়। পরে সেই ব্যক্তিকে আধা দিনের জন্য নিজের সিংহাসনে বসিয়ে ঋণ চুকিয়েছিলেন হুমায়ূন।’
কনৌজের যুদ্ধেও হারতে হয় হুমায়ূনকে
পরের বছর, চৌসার যুদ্ধে পরাজয়ের বদলা নিতে রওনা হন হুমায়ূন। কিন্তু সেই সময়ে তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সেনাপতি তাকে ছেড়ে চলে যায়। যার ফলে কনৌজের যুদ্ধে আবারো শের শাহের কাছে পরাজিত হন হুমায়ূন।
জোহর আফতাবচি লিখছেন, ‘আফগান সৈনিকরা হুমায়ূনের চোখের সামনেই তার তোপখানা লুঠ করছিল। হুমায়ূনের নজরে পড়ে এক বুড়ো হাতি, যেটা একসময়ে তার বাবার কাছে ছিল। ওই হাতিতে চেপেই তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু একটা সময়ে তার মনে হয় যে মাহুত যেন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার বদলে শত্রু শিবিরের দিকেই তাকে নিয়ে যাচ্ছে। হাওদায় লুকিয়ে থাকা এক হিজড়া হুমায়ূনকে পরামর্শ দেয় তিনি যেন তরবারি দিয়ে ওই মাহুতের মাথাটা কেটে দেন। ওদিকে আবার হুমায়ূন নিজে হাতি চালাতে পারেন না, তাই মাহুত ছাড়া তিনি তো এগোতেই পারবেন না। তখন ওই হিজড়া বলে যে সে কিছুটা হাতি চালাতে পারে, সে হুমায়ূনকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাবে। হুমায়ূন এই কথা শুনে মাহুতের মাথা কেটে ফেলেন।’
আকবরনামা গ্রন্থে আবুল ফজলও এই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তার বর্ণনায় হাতির পিঠে থাকা হাওদায় যে কোনো হিজড়াও ছিল, সেটা আবুল ফজলের লেখায় নেই।
আবার হায়দর মির্জা দোগলৎ তার বইতে লিখেছেন, ‘সেদিন হুমায়ূনের সাথে ১৭ হাজার সৈনিক লড়াই করেছিল, কিন্তু যখন তিনি পালিয়ে যাচ্ছেন, তখন একেবারে একা। মাথায় না ছিল পাগড়ি, না ছিল পায়ে জুতো। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলেন হুমায়ূন।
ভাইদের সাথে মতবিরোধ
কনৌজ থেকে আগ্রা পর্যন্ত হুমায়ূনকে যেতে হয়েছিল একটি ধার করা ঘোড়ায় চেপে। ততক্ষণে তার পরাজয়ের খবর ছড়িয়ে পড়েছে।
জোহর আফতাবচি লিখছেন, ‘আগ্রা আর কনৌজের মাঝামাঝি ভানগাঁও নামের একটা গ্রামের প্রায় হাজার তিনেক মানুষ হুমায়ূনকে আটকিয়ে দেয়। তাদের দাবি ছিল সম্রাটের সেনারা গ্রামে লুঠপাট চালিয়েছে, হুমায়ূনকে সব ফেরত দিতে হবে। হুমায়ূন তার দুই ভাই হিন্দাল আর অস্করিকে গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলার দায়িত্ব দিলেন। কিন্তু তারা দু’জন নিজেদের মধ্যেই ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেলল। কোনোমতে ওই গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে তিনি শেষমেশ আগ্রা পৌঁছান।’
তবে ১৫৪০ সালেই, বাবার মৃত্যুর ঠিক ১০ বছর পরে হুমায়ূনকে আগ্রা ছাড়তে হয়। যখন আগ্রা থেকে পালাচ্ছিলেন হুমায়ূন, শের শাহ তার রাজপুত সেনাপতি ব্রহ্মদত গৌড়কে নির্দেশ দিলেন হুমায়ূনকে তাড়া করতে।
আব্বাস সরওয়ানি লিখছেন, ‘গৌড়ের ওপরে নির্দেশ ছিল যে হুমায়ূনের সাথে লড়াই না করে শুধু তাকে তাড়া করার। আবার হুমায়ূনকে আটক করারও উদ্দেশ্য ছিল না। শের শাহ তাকে ভারত থেকে তাড়ানোর কথাই ভেবেছিলেন।’
এরই মধ্যে হুমায়ূনের দুই ভাই হিন্দাল ও অস্করি ফিরে গেলেন আগ্রায়। হুমায়ূনের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয় তারা সেখানে শাসন চালাতে লাগলেন। তাদের নামে খুতবাও পড়া হতে লাগল। শের শাহের সাথে লড়াইয়ের জন্য নিজের ভাইদের প্রস্তাব দিলেন হুমায়ূন। কিন্তু তার আরেক ভাই কামরান সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিলেন। কিছু সৈন্য নিয়ে লাহোরের দিকে রওনা দেন হুমায়ূন।
ভারত থেকে পলায়ন, দিল্লি পুনরুদ্ধার
হুমায়ূনের বোন গুলবদন বেগম লিখছেন, ‘লাহোরে পৌঁছে হুমায়ূন শের শাহকে বার্তা পাঠালেন- আমি আপনার জন্য গোটা হিন্দুস্তান ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু আমাকে অন্তত লাহোরে থাকতে দিন। শের শাহের জবাব ছিল- আমি তোমার জন্য কাবুল ছেড়ে রেখেছি। তুমি সেখানে চলে যাচ্ছ না কেন? পরের ১৫ বছর হুমায়ূনকে দিল্লির মসনদ ছেড়ে ইরান, সিন্ধ আর আফগানিস্তানে কাটাতে হয়।’
একটা বিস্ফোরণে ১৫৪৫ সালের মে মাসে মৃত্যু হয় শের শাহের। ১৫৫৩ সালে মারা যান তার ছেলেও। তারপরেই তার সাম্রাজ্য ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করে। পরের বছর কাবুলে খবর পৌঁছায় যে সেলিম শাহ সুরির মৃত্যু হয়েছে আর তার ছেলেকে মেরে ফেলেছে তার আপন চাচারাই।
হুমায়ূন এমন সংবাদে তার হারানো সাম্রাজ্য পুণরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন। ওই বছর নভেম্বর মাসে যখন হুমায়ূন কাবুল থেকে ভারতের উদ্দেশ্য রওনা হলেন, তখন তার কাছে মাত্র তিন হাজার সৈন্য। ভারতে প্রবেশে আগে ১৫৫৪ সালের ডিসেম্বর মাসে যখন সিন্ধু নদ পার হচ্ছেন হুমায়ূন, তখন সুরি বংশের তিন দাবিদার তার সামনে এসে গেছে। এদের মধ্যে সবথেকে প্রধান দাবিদার ছিলেন সিকান্দার শাহ। তিনি দিল্লি থেকে পাঞ্জাবের রোহতাস পর্যন্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন। হুমায়ূন যুদ্ধে নামার আগে কান্দাহার থেকে বৈরাম খাঁকে ডেকে পাঠালেন। ১২ বছরের আকবরও ছিলেন সাথে।
হুমায়ূন যখন ১৫৫৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি লাহোরে প্রবেশ করেন, তখন তাকে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। সরহিন্দের লড়াইতে আকবর একটি সেনাদলের নেতৃত্বও দিয়েছিলেন। সিকান্দার সুরি লড়াইয়ের ময়দান থেকে পালিয়ে পাঞ্জাবের জঙ্গলে আশ্রয় নিলেন। ২৩ জুলাই, ১৫৫৫, দিল্লিতে প্রবেশ করলেন হুমায়ূন। কিন্তু ভাগ্য তার সহায় হয়নি বেশি দিনের জন্য।
শেষের দিন
শেষ আফিমের বড়িটা খাওয়ার জন্য তিনি গোলাপ জল আনতে হুকুম করেছিলেন। দিনটা ছিল ২৪ জানুয়ারি, ১৫৫৬। এর আগে হজ থেকে ফিরে আসা কয়েকজনের সাথে দুপুরে সাক্ষাত করেন তিনি। লাল পাথরের তৈরি নিজের লাইব্রেরি ঘরে তাদের সাথে সাক্ষাতের জায়গা ঠিক করা ছিল। ওই লাইব্রেরিটা আবার ছিল ছাদের ওপরে। তাদের ছাদে নিয়ে যাওয়ার আরো একটা কারণ ছিল। জুমার নামাজের জন্য জড়ো হওয়া প্রজারা তাদের সম্রাটকে যাতে ছাদ থেকে দেখতে পায়।
ওই দলের সাথে সাক্ষাতের পরে তার গণিতজ্ঞকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন হুমায়ূন।
গুলবদন বেগম লিখছেন, ‘সেদিন খুব ঠাণ্ডা ছিল, জোরে হাওয়াও বইছিল। হুমায়ূন ছাদ থেকে নামতে শুরু করেন। হঠাৎই মসজিদ থেকে আজানের আওয়াজ আসে। সেটা শুনেই ধার্মিক হুমায়ূন সিঁড়িতেই সিজদা করার জন্য একটু ঝুঁকতে গিয়েছিলেন, আর তখনই তার পোশাকে পা জড়িয়ে যায়। সম্রাট হুমায়ূন সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়তে থাকেন। তার সহচররা ধরার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সম্রাট ততক্ষণে গড়িয়ে পড়েছেন অনেকগুলো সিঁড়ি। তারা তাড়াতাড়ি নীচে নেমে দেখে সম্রাট মাটিতে পড়ে আছেন। মাথায় গভীর আঘাত পেয়েছিলেন হুমায়ূন আর তার ডান কান থেকে রক্ত বের হচ্ছিল।
হুমায়ূন আর চোখ মেলে তাকাননি। তিন দিন পরে তার মৃত্যু হয়।