প্রেমের টানে ভারতে ঢুকেছিলেন পাকিস্তানের এক তরুণী। অনলাইনে পরিচয় হওয়া ভারতীয় প্রেমিকের সঙ্গে থাকার জন্য অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশ করেন তিনি। পরে জাল পরিচয় ব্যবহার করে ভারতের বেঙ্গালুরু শহরে বসবাসও শুরু করেন তারা।
আর এরই জেরে পাকিস্তানি ওই তরুণী ও তার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ এবং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেঙ্গালুরু পুলিশ সোমবার বলেছে, তারা ১৯ বছর বয়সী এক পাকিস্তানি তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত পাকিস্তানি ওই তরুণীর নাম ইকরা জিওয়ানি। তিনি উত্তর প্রদেশের এক ভারতীয় যুবককে বিয়ে করেছেন বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে জিওয়ানিকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য মুলায়ম সিং যাদব নামে ২৬ বয়সী ওই ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাকিস্তানি এক নাগরিক বৈধ নথি ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করেছে এবং বেঙ্গালুরুতে বসবাস করছে বলে ভারতের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরো তথ্য পাওয়ার পরই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ইকরা ও মুলায়মের প্রথম আলাপ হয়েছিল অনলাইনে লুডো খেলতে খেলতে। সেখান থেকে ভালোলাগা এবং ভালোবাসা। কিন্তু প্রেমের বাধা আন্তর্জাতিক সীমান্ত। কারণ প্রেমিক ভারতীয় হলেও প্রেমিকা পাকিস্তানি। কিন্তু প্রেমের টানে বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসেন পাকিস্তানি তরুণী ইকরা।
পরে তার সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় প্রেমিক মুলায়মকেও। বিয়ে করে কিছুদিন আগে তারা সংসার পেতেছিলেন বেঙ্গালুরুতে। তবে সোমবার দু’জনকেই গ্রেপ্তার করে বেঙ্গালুরুর পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, অনলাইনে লুডো খেলার সময় ইকরা এবং মুলায়মের একে অপরের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। সেই আলাপ, ভালোবাসায় পরিণত হতেই ইকরা ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ভারত-নেপাল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তিনি। নেপালের কাঠমান্ডুতে হিন্দু রীতিতে তাদের বিয়ে হয়।
এরপর বিহারে চলে যান তারা। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর তারা বেঙ্গালুরুতে ফিরে আসেন। তত দিনে ইকরার নাম হয়েছে রাভা যাদব। পরে তার নামে একটি ভুয়া আধার কার্ডও তৈরি করান মুলায়ম। বেঙ্গালুরু ফিরে এসে তারা ভাড়া বাসায় থাকতে শুরু করেন।
পুলিশ বলছে, পেশায় নিরাপত্তারক্ষী মুলায়মের বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। কিন্তু গত সাত বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে থাকেন তিনি। তার দাবি, ইকরার বাড়ি যে পাকিস্তানে, তা তিনি জানতেন না। পরে তিনি জানতে পারেন ইকরা পার্শ্ববর্তী দেশের হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা।
পুলিশ ইকরা এবং মুলায়মের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরুর পাশাপাশি তাদেরকে বাড়ি ভাড়া দেওয়া গোবিন্দের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ফরেনার্স অ্যাক্টের ৭(২) ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৮ এবং ৪৭১ ধারার অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া বাড়ি ভাড়া দেওয়ার সময় ভাড়াটিয়ার বিস্তারিত তথ্য না নেওয়ার দায়ে রেড্ডির বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে।
পরে জিওয়ানিকে বেঙ্গালুরুর ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে (এফআরআরও) হাজির করা হয়।