আগামী অক্টোবরে বয়স পূর্ণ হবে ৪০। তবু এখনো তরুণ পেসারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ছেন মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। চলতি বিপিএলে উইকেট শিকারিদের তালিকায় আছেন তিনি ওপরের দিকে।
গতি ও ধার কমে গেলেও বোলিংয়ের লাইন-লেংথেও মনে করিয়ে দিচ্ছেন নিজের সেরা সময়কে। জাতীয় দলে তার দীর্ঘদিনের সতীর্থ মোহাম্মদ আশরাফুলের বিশ্বাস— ১০ বছর পরও এমন পারফরম্যান্স করতে পারবেন মাশরাফি।
বিপিএলের এবারের আসর শুরুর আগেই মাশরাফির দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের নামের পাশে লেগে যায় ‘বুড়োদের দল’ তকমা। কোচিং প্যানেলে স্থানীয় সাবেক ক্রিকেটার কিংবা খেলোয়াড় তালিকায়ও আছে অভিজ্ঞদের উপস্থিতি। সেই দলটিই নিজেদের প্রথম পাঁচ ম্যাচে হারেনি একটিও। ষষ্ঠ ম্যাচে লিটন দাসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে থামে জয়রথ। সিলেটের এই উড়ন্ত শুরুর পেছনে উল্লেখযোগ্য অবদান অধিনায়ক মাশরাফির।
৬ ম্যাচে ২০ ওভার বোলিং করে তার শিকার ৯ উইকেট। ওভারপ্রতি খরচ করেছেন স্রেফ ৬.৭৫ রান। উইকেট শিকারিদের তালিকায় মাশরাফির ওপরে আছেন শুধু ওয়াহাব রিয়াজ (৫ ম্যাচে ১১ উইকেট)।
শুধু উইকেট সংখ্যায় পুরো চিত্রটা ফুটে ওঠে না। প্রায় প্রতি ম্যাচেই নতুন বলে দারুণ লাইন-লেংথে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখছেন মাশরাফি। দলের প্রয়োজনে শেষ দিকের ওভারগুলোতেও বোলিং করছেন সমান উদ্যমে।
এই মাশরাফিকে দেখে যেমন মুগ্ধ আশরাফুল, তেমনি তার চোখে পড়ছে উদ্বেগের একটি দিকও। মিরপুর সিটি ক্লাব মাঠে রোববার একটি আয়োজনে অতিথি হয়ে এসে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি তুলে ধরলেন দুটি দিকই।
‘যারা আসলে খুব প্রতিভাবান, তাদের ক্ষেত্রে বয়সটা আসলে কোনো ব্যাপার নয়। এটা শুধু একটা সংখ্যা। যেহেতু সে (মাশরাফি) সহজাত প্রতিভাবান, ৫০ বছরে গিয়েও তার পারফরম্যান্সটা করতে পারবে, আমি বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন, এটা একদিক থেকে ইতিবাচক, আরেকদিক থেকে আবার মনে হয় আমরা উন্নতি করছি কিনা। কারণ সে (মাশরাফি) পাওয়ার প্লেতে ৩ ওভার বল করছে ১১০ (কিমি প্রতি ঘণ্টা) পেসে, চমৎকার লাইন-লেংথে বল করছে। কিন্তু আমাদের যারা টপ প্লেয়ার তারা ওর বলে আউট হচ্ছে, পাওয়ার হিট করতে পারছে না। ওই জায়গায় চিন্তা হচ্ছে, আসলে আমাদের খেলায় উন্নতি হচ্ছে কিনা।
২০২০ সালের মার্চের পর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি মাশরাফি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন ২০১৭ সালের এপ্রিলে। আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো অবসর নেননি তিনি। তবে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ বলেই ধরে নেওয়া যায়।