ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে নানা ধরনের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অসুস্থতা নিয়ে একের পর এক পোস্ট আর সবশেষ হাসপাতালের শয্যায় চিকিৎসাধীন ছবি শেয়ার করার পর সেই গুঞ্জন আরও ডালপালা মেলেছে।
বাংলাদেশি এই লেখিকার কী এমন হলো যে তিনি শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে একের পর এক পোস্ট শেয়ার করছেন; ভক্তদের অনেকেই তা জানার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তসলিমা নাসরিন কিংবা তার ঘনিষ্ঠজনদের কেউই এই অসুস্থতা নিয়ে মুখ খোলেননি। যে কারণে তাদের মনে নানা ধরনের প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে।
গত ১৪ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘গতকাল ঠিক এই সময় মৃত্যু হয়েছে আমার। এখন ফিউনারেল চলছে।’ লিখে একটি পোস্ট করেন। সেই পোস্টের নিচে অনেকেই তার অসুস্থতার ব্যাপারে জানতে চেয়ে কমেন্ট করলেও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। তবে ভক্তদের অনেকেই তার সুস্থতা কামনা করে কমেন্ট করেছেন।
মঙ্গলবার সকালের দিকে ফেসবুকে দেওয়া আরেক পোস্টে তসলিমা লিখেছেন, “সেই মৃত্যু আমার উচ্ছল উজ্জ্বল জীবনকে গ্রাস করে নিয়ে একটি স্তব্ধ স্থবির জীবন ফেলে রেখে গেছে। এই জীবনটি আমার নয়, অথচ আমার।”
‘সেই মৃত্যুতে কেঁদেছিল আমার বোন। বোনের অনেকে আছে, পরিবার পরিজন। বোনের চোখের জল ছাড়া আমার সম্পদ কিছু নেই।’
গত রোববার রাত ১০টা ২০মিনিটের দিকে ছবি পোস্ট করেন তসলিমা। সেখানে দেখা যায়, তিনি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন। তসলিমা যে সেখানে চিকিৎসা করাতে এসেছেন, তা ওই ছবিতে স্পষ্ট। পাশে পাঁচজন দাঁড়িয়ে আছেন। তবে তাদের কেউই চিকিৎসাকর্মীর পোশাকে নেই। তাদের দেখে শুভাকাঙ্ক্ষী মনে হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার লিখেছে, ‘অদ্ভুত’ সব পোস্টের পর এমন একটা ছবি আলোড়ন ফেলেছিল— কী হয়েছে তসলিমার? আগের পোস্টগুলোর সঙ্গে এই ছবির কি কোনও যোগসূত্র রয়েছে? তসলিমা যদিও তার ছবির সঙ্গে কোনও লেখা পোস্ট করেননি। ফলে বিভ্রান্তি আরও বেড়েছিল।
তবে পোস্ট করার কিছুক্ষণ আগে তসলিমা কিছু নথি আপলোড করেন। সেখানে দেখা যায়, ২০১৮ সালে দিল্লির এমসে তিনি মরণোত্তর দেহদান করেছেন। একাধিক নথির একটিতে লেখা, তার মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই যেন হাসপাতালে খবর দেওয়া হয়। কারণ তার দেহ দান করা হয়েছে।
এর আগে, গত ৬ জানুয়ারি একটি ছবি পোস্ট করে নিজের ওজন কমানোর তথ্য জানিয়েছিলেন তসলিমা নাসরিন। সেদিন তিনি লিখেছিলেন, ‘৮০ কিলো থেকে চেষ্টা চরিত্তির করে ৮ মাসে হয়েছিলাম ৫২ কিলো। ৫২র হাড় সর্বস্ব শরীর দেখে ভয়ে পিছু হটতে শুরু করলাম। ২ মাসে তড়িঘড়ি ওজন বাড়িয়ে করলাম ৫৬.৫ কিলো। এখানেই থেমে থাকুক চাইছি। আজ ডিনার করলাম অনুত্তম সেনের সংগে। আমি আবার প্রচন্ড ভোজনরসিক। খেতে খেতে আমাদের জমে যাওয়া আড্ডা বা আলোচনায় ছিল মূলত মুভি, মিউজিক, মিস্ট্রি, আর কিছুটা হিউমার আর হিস্ট্রি।’
এছাড়া তিনি বেশ কিছু পুরোনো পোস্টও শেয়ার করছেন গত কয়েকদিন ধরে। যেমন শেয়ার করা একটি পুরোনো পোস্ট, যেটি তিনি লিখেছিলেন ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি। ওই পোস্টের শেষে লেখা ছিল, ‘বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের কত কিছু, জগৎ ও জীবনের কত কিছু অজানা রেখে আমাদের চলে যেতে হয়!’