পোখারায় নামলেই ১০০ ঘণ্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা পূর্ণ হত ইয়েতি এয়ারলাইন্সের কো পাইলট অঞ্জু খাতিওয়াদার, পেতেন ক্যাপ্টেন হওয়ার লাইসেন্স।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) তার সেই স্বপ্ন বিধ্বস্ত হয়েছে বিমানটির সঙ্গেই। ১৬ বছর আগে এক বিমান দুর্ঘটনায় পাইলট স্বামীকে হারানো অঞ্জুর জীবনেও ঘটেছে একই পরিণতি।
কাঠমান্ডু থেকে ৭২ জন আরোহী নিয়ে উড়ে পর্যটন নগরী পোখরায় নামার পথে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এটিআর ৭২-৫০০ উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয় রোববার সকালে।
ওই ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন ৬৮ জন, বাকিরা ক্রু। ক্যাপ্টেন কামাল কেসির সঙ্গে কো পাইলটের আসনে ছিলেন অঞ্জু খাতিওয়াদা।
এর আগে ২০০৬ সালের ১২ জুন উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েই প্রাণ হারান অঞ্জুর স্বামী দীপক পোখারেল। তিনিও ছিলেন কো–পাইলট। আর সেই উড়োজাহাজটিও ছিল ইয়েতি এয়ারলাইনসের। সেটি বিধ্বস্ত হয়েছিল জুমলা বিমানবন্দরে। সেবার দীপকসহ প্রাণ হারান ১০ আরোহী।
স্বামীর মৃত্যুর পরই অঞ্জু পাইলট হবেন বলে স্থির করেন। স্বামী মারা যাওয়ার তার স্বপ্নপূরণ করবেন বলে সংকল্প নেন। এরপর পাইলট হওয়ার জন্য পড়াশোনা শুরু করেন অঞ্জু। পড়ার জন্য যান যুক্তরাষ্ট্রে। স্বামীর মৃত্যুর চার বছরের মাথায় তার পড়াশোনো শেষ হয়। এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে নেপালে ফিরে কাজে যোগ দেন।
নেপালে ফিরে এটিআর মডেলের উড়োজাহাজ চালানোর মধ্য দিয়ে পেশাজীবন শুরু করেন অঞ্জু। সেই এটিআর মডেলের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে রোববার প্রাণ হারাতে হলো তাকে। অঞ্জুর স্বামী দীপক প্রথমে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার চালাতেন। কিন্ত পরে ইয়েতি এয়ারলাইনসে পাইলট হিসেবে যোগ দেন তিনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এক আত্মীয় দুঃখ করে লোকান্তরকে বলেন, এ এক বিরল কাকতালীয় ঘটনা, স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই ছিলেন বৈমানিক, দুজনই বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন এত বছরের ব্যবধানে।
নেপালের বিরাটনগর শহরে স্কুলে পড়েন অঞ্জু। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য ভারতে যান। এর মধ্যে অঞ্জুর বিয়ে হয় দীপকের সঙ্গে। তাদের ২২ বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে। দীপকের মৃত্যুর পর সুভাষ কে সি নামে কাঠমাণ্ডুর এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন তিনি। অঞ্জু ও সুভাষ দম্পতির সাত বছরের একটি ছেলে আছে।