ভারতে আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না, কিন্তু আমাদের পাশে থাকলে শক্তি পাবে। এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সফররত ভারতীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমাদের ভুল-ত্রুটি আছে। তারপরও একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার চেয়ে কোনো বিশ্বস্ত বন্ধু আরেকজন আপনাদের নেই। এটা ভারতকে মনে রাখতে হবে ভারত আমাদের বন্ধু। আমরা বিশ্বাস করি, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভুলে যাওয়ার নয়। আমরা বিশ্বাস করি ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক বজায় রেখে আমাদের যে পাওনাটা পাবো সেটা আদায় করা সম্ভব না। তারপর কিছু বিষয়ে আছে সমাধান হয়নি। এসব ভারতের সঙ্গে আলোচনা করেই সমাধান করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার চেয়ে ভারতের ভালো বন্ধ নেই।
বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় এরপরে পরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। একইভাবে ২০০৪ সালে দিবালোকে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্য প্রাইম টার্গেট করে গ্রেনেড হামলা করা হয়। এটা হলো বিএনপির কাজ। তারা ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে।
ওবায়দুল কাদের ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মিল আছে। ভারতের সঙ্গে ১৯৭১ সালের সম্পর্কের রাখি বন্ধন এখনো আছে। আমরা ভুলবো না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্মাণ হয়েছে। এখন আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করা। ২০৪১ সালে মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করবো। এবছরে আরও দুইটি মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন না দিয়ে ভুল করেছে এখন সেটা বুঝতে পারছে ভারতীয় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পদ্মাসেতু অর্থায়নে থেকে যখন বিশ্বব্যাংক সরে গেছে তখন শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছিলেন নিজের টাকায় পদ্মাসেতু করবো। সেটা করেছেন। এখন বিশ্বব্যাংক তাদের ভুল স্বীকার করেছেন।
ভারতীয় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারাও একটু বলেন বাংলাদেশের দিকে একটু তাকাতে। পানিসহ যেসব বিষয় এখনো সমাধান হয়নি তা নিয়ে আলোচনা চলছে। শেয়ারিং বিষয় গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়।
ভারতীয় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন,
গতবারের চেয়ে এবারের নির্বাচন টাপ হবে। তবে দেশের জনগণ আমাদের পক্ষে আছে। ভারত আমাদের বন্ধু পাশে থাকলেই হবে। ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না কিন্তু ভারত আমাদের পাশে থাকলে আমরা শক্তিপাব।
তিনি বলেন, ৭৫ পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে ঐক্যবদ্ধ আছে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে হারানো সম্ভব না। আওয়ামী লীগে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। সবাই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল হলো আওয়ামী লীগ আর সাম্প্রদায়িক দল হলো বিএনপি। বিএনপি জামায়াত জঙ্গি ও ডান-বামদের সঙ্গে জোট করছে। আওয়ামী লীগও জোট করবে। জোট না করলে বাংলাদেশের মানুষ মনে করে এদের মনে কেউ নেই। বিএনপি জামায়াতের -জঙ্গি ডান-বামে মিলে ৩৪ দল মিলে জোট করেছে। যা জগা খিচুড়ি জোট।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রামেদ চন্দ্র সেন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের হাইকমিশনের উপপ্রেসব সচিব রঞ্জন সেন।