আলাপ-আলোচনার পর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তবে বিয়ে ঠিক হওয়ার সময় কোনও কথা না হলেও পরে যৌতুক হিসেবে ফরচুনার গাড়ি দাবি করেন পাত্র। পেশায় তিনি সরকারি কলেজের প্রভাষক। আর সেই গাড়ি না পেয়ে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশে। গত বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাউ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কনের পরিবার যৌতুক হিসেবে ফরচুনার গাড়ি দিতে অস্বীকার করায় সরকারি কলেজের এক প্রভাষক বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে।
পরে অবশ্য কনের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারি কলেজের ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে যৌতুক আইনে মামলা করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিয়ের এক মাস আগে ওই প্রভাষক কনের পরিবারের কাছে যৌতুক হিসেবে ফরচুনার গাড়ি চেয়েছিলেন। কনের পরিবার তাকে সেটি দিতে অস্বীকার করায় প্রভাষক কনের ফোনে একটি টেক্সট পাঠিয়ে বিয়ে ভেঙে দেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, অভিযুক্ত ওই পাত্রের নাম সিদ্ধার্থ বিহার। তিনি উত্তরপ্রদেশের এক সরকারি কলেজের শিক্ষক। বিয়ের যৌতুক হিসাবে তিনি একটি ফরচুনার গাড়ি চেয়েছিলেন। হবু শ্বশুরবাড়ির লোকজন সেই গাড়ি দিতে অস্বীকার করায় বিয়ে ভেঙে দেন তিনি।
মূলত উভয় পক্ষের বাড়ি থেকে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল জোরকদমে। বর এবং কনে দু’জনেই উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বাসিন্দা। কনের বাড়ির লোকজনও কলেজশিক্ষক পাত্র পেয়ে যথেষ্ট নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন। বিয়ের পাকা কথা বলার সময়ে যৌতুকের কথা বলেননি পাত্রের বাড়ির লোকজন। পাত্র নিজেও কোনও দাবি করেননি। সব ঠিকঠাকই চলছিল।
বিয়ের আগে হঠাৎই একটি গাড়ি চেয়ে বসেন পাত্র। হবু শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে সে কথা জানিয়েও আসেন। তবে তারা যে বরের দাবিকৃত গাড়ি দিতে অপারগ, স্পষ্ট করেই তা জানিয়ে দেওয়া হয় হবু পাত্রকে। সে কথা শুনেই পাত্রীর ফোনে মেসেজ করে বিয়ে ভেঙে দেন পাত্র।
পরে ওই কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৫০৬ ধারায় মামলা করেন পাত্রীর বাড়ির লোকজন।
থানায় লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, বর এবং কনের উভয় পরিবারই ২০২২ সালের মে মাসে মিলিত হন এবং পরে একই বছরের ১৯ জুন বাগদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। সেসময় আলোচনার পর, উভয় পরিবার ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি বিয়ের দিন ঠিক করে।
এরপর গত বছরের ১০ অক্টোবর কনের পরিবার বরের জন্য উপহার হিসাবে একটি ওয়াগন আর (WagonR) গাড়ি বুক করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বরের পরিবারের এক সদস্য কনের বাড়িতে এসে ওই গাড়ির বদলে ফরচুনার গাড়ি দাবি করেন।
তবে কনের পরিবার তাদের দাবি মানতে রাজি হয়নি। এরপর ২৩ নভেম্বর ওই কলেজশিক্ষক বিবাহ ভেঙে দেন বলে কনের বাবার এফআইআর-এ বলা হয়েছে।
এরপর সরকারি কলেজের প্রভাষক এবং তার আত্মীয়কে আইপিসি ধারা ৫০৬ (অপরাধমূলক ভয় দেখানো) এবং যৌতুক আইনে মামলা করা হয়েছে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে।