আফগানিস্তানে নারী ও মেয়েদের লক্ষ্য করে তালেবানের জারি করা নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান আফগান নারীদের ভয়াবহ এই পরিণতির তীব্র নিন্দাও জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, কোনও দেশই তার অর্ধেক জনসংখ্যাকে বাদ দিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়ন— প্রকৃতপক্ষে টিকে থাকতে পারে না।
‘নারী এবং মেয়েদের ওপর এই দুর্বোধ্য বিধিনিষেধ কেবল সকল আফগানের দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলবে না, বরং আফগানিস্তানের সীমানার বাইরেও ঝুঁকি তৈরি করবে বলে আমি আশঙ্কা করছি।’
তালেবানের এসব নীতি আফগান সমাজকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ভলকার তুর্ক বলেছেন, ‘আমি আফগানিস্তানের ডি-ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষকে সকল নারী ও মেয়েদের অধিকারের প্রতি সম্মান এবং সুরক্ষা নিশ্চিতের অনুরোধ জানাচ্ছি— যাতে তাদের দেখা যায়, শোনা যায় এবং দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের সকল ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ ও অবদান রাখতে পারে।’
এর আগে, শনিবার আফগানিস্তানের তালেবান-নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন দেশটির সব স্থানীয় এবং বিদেশি বেসরকারি সংস্থাকে (এনজিও) নারী কর্মীদের কাজে আসতে বারণ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিষিদ্ধ করার কয়েক দিন পর দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
মানবাধিকার ও নারী অধিকারের প্রতি সহনশীলতা প্রদর্শনের অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় আসা তালেবান ইতোমধ্যে আফগান নারীদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে চাকরি থেকে মেয়েদের বহিষ্কার, অভিভাবক ছাড়া গাড়িতে চলাচল ও মেয়েদের ষষ্ঠ শ্রেণির পর স্কুলে নিষিদ্ধ করার তালেবানের সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ভলকার তুর্ক বলেছেন, আফগানিস্তানের ডি-ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ এই আদেশ নারীদের এবং সব আফগান জনগণের জন্য ভয়ানক পরিণতি বয়ে আনবে।
তিনি বলেন, ‘নারী ও মেয়েদের তাদের সহজাত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। তাদের নীরব এবং অদৃশ্য করে দিতে ডি-ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টা সফল হবে না।’