অবশেষে কাতার বিশ্বকাপে গেরো কাটাল আর্জেন্টিনা। ৩৬ বছর পর দেশটিতে গেল বিশ্বসেরার শিরোপা। তাই লতিন আমেরিকার দেশটিতে এখনও চলছে উল্লাস ও উদযাপন। তবে উৎসবের রেশ না কাটতেই নতুন সংবাদ এল তাদের কাছে। ফাইনাল ম্যাচ বাতিল করে আবারও ম্যাচটি খেলার জন্য ফিফার কাছে আবেদন করেছে ফ্রান্সের সমর্থকরা।
কিছুটা অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্য যে, এবারের বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচটাকে কোনোভাবেই মানতে পারছে না ফরাসি সমর্থকরা। তাদের দাবি ফাইনালে বেশকিছু কারচুপি হয়েছে এবং রেফারি আর্জেন্টিনার পক্ষে ছিল। তাই ফাইনাল ম্যাচ আবারও আয়োজনের দাবিতে তারা সোচ্চার হয়েছেন।
ব্যাপারটা দাবিতেই সীমাবদ্ধ থাকলে তাও মানা যেত। কিন্তু না। ফরাসি সমর্থকরা যেন তাদের দাবি বাস্তবায়নে আরও এক ধাপ এগিয়ে। বিপুল পরিমাণ ফরাসি সমর্থক সত্যি সত্যিই চান, কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ আবারও খেলা হোক। আর তাই প্রায় ২ লাখ মানুষের সই নিয়ে পিটিশনও করা হয়েছে।
গত ১৮ ডিসেম্বরের বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ ২-২ গোলে শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ের শেষে ফল ছিল ৩-৩। পরে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। এই ফলাফলে ক্ষুব্ধ ফ্রান্সের দু’লাখ সমর্থক। তারা আর্জেন্টিনার প্রথম দু’টি গোলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবি, প্রথম দু’টি গোল পাইয়ে দেওয়া হয়েছে মেসিদের। সে জন্যই ফ্রান্স হেরে গিয়েছে। তাই তারা দাবি করছে, আবার আয়োজন করা হোক ফাইনাল ম্যাচ।
ম্যাচের ২৩ মিনিটে পোলিশ রেফারি সিমন মার্চিনিয়াকের দেওয়া পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক হয়েছে ম্যাচের পর। অনেকেই মনে করেন, ওসমান দেম্বেলে দি মারিয়াকে ফাউল করেননি। এরপর ৩৬ মিনিটে দি মারিয়ার দ্বিতীয় গোলের আগে ফ্রান্সের স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে ফাউলের শিকার হয়েছিলেন, রেফারি তা দেখেননি—এ নিয়েও যুক্তিতর্ক হয়েছে। তবে ব্যাপারটি এখন আর শুধু যুক্তিতর্কেই সীমাবদ্ধ নেই।
অনলাইনে পিটিশনের প্ল্যাটফর্ম ‘মেসওপিনিয়নস’ এ বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচ পুনরায় খেলার দাবিতে একটি পিটিশন করা হয়েছে। পিটিশনের নাম ‘রেফারিকে কিনে নেওয়া হয়েছিল, পেনাল্টিটি হয় না এবং দ্বিতীয় গোলের আগে এমবাপ্পে ফাউলের শিকার হয়। ম্যাচটি পুনরায় খেলার দাবিতে সই করুন।’
‘ইকোনমিক টাইমস’ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে এই পিটিশনে সইয়ের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ। সর্বোচ্চ সই পাওয়া শীর্ষ ২০টি পিটিশনের মধ্যে আছে এটি। ৫ লাখ সই টপকে গেলে এই পিটিশন ফরাসি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সর্বোচ্চ সই পাওয়া তিনটি পিটিশনের একটি হবে। পিটিশনে সই করা বেশির ভাগ নাগরিকই ফ্রান্সের এবং মন্তব্যসংখ্যা ৮৫ হাজারের বেশি।
ফ্রান্সের ফুটবলপ্রেমীদের দাবি, রেফারি যথাযথ ভাবে খেলা পরিচালনা করলে প্রথমার্ধে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারত না আর্জেন্টিনা। তা হলে নির্ধারিত সময়েই এমবাপের জোড়া গোলে ম্যাচ জিতে পর পর দু’বার বিশ্বকাপ জেতার অনন্য এক নজির গড়ত ফ্রান্স।