চলতি বছর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মোট ১৫টি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে সেখানে ৩৪৯ রান করলেও বল হাতে অচেনা সাকিব, মোটে ৩ উইকেট। নেই আহামরি কোনো মনে রাখার মতো ইনিংস। ফর্মহীনতায় ডাক পাননি পিএসএল এবং হান্ড্রেডে। তবুও দেড় কোটি রুপিতে সাকিবকে দলে টেনেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
নতুন অনেক উদীয়মান তারকা এসেছেন এবারের আইপিএলে। তাদের না কিনে ৩৫ বছর বয়সী সাকিবকে কেন দলে নিল কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজিটি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতোমধ্যেই। তবে সত্যিই কেন কলকাতার দলে সাকিব সেটা একটু ভেবে দেখা যাক।
গতকাল ভারতের কোচিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে স্বল্প পরিসরের আইপিএল নিলাম। নিলামের প্রথম ডাকে সাকিবের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি কেউ। কিন্তু শেষবেলায় এসে চমকে দেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। অভিজ্ঞ এ খেলোয়াড়কে দেড় কোটি রুপিতে দলে টেনে নেয় কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো সাকিবকে দলে নিয়েছে বলিউড মহাতারকা শাহরুখ খানের দল।
সাকিবকে দলে নেওয়ার পেছনে মূলত দুটো কারণ থাকতে পারে কলকাতার। ক্যারিয়ারের বেশ বড় একটা সময় বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন লিগ ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলেছেন সাকিব। সেখান থেকে তার অর্জিত অভিজ্ঞতাটা নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে দেবে কলকাতাকে। দ্বিতীয়ত, সাকিবের মতো অভিজ্ঞ এবং ম্যাচ উইনার খেলোয়াড়কে কম দামে দলে টানার সুযোগ পেয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
সুনীল নারিন, আন্দ্রে রাসেল ও শ্রেয়াস আইয়ারদের নিয়ে গড়া শক্ত দল কলকাতা ব্যাটিং-বোলিংয়ে প্রায় সমান ব্যালেন্সড দল। কিন্তু প্রোপার অলরাউন্ডারের অভাবে গত মৌসুমটা ভুগতে হয়েছে তাদের। সাকিব দলে থাকলে একজন ইকোনমিকাল বোলার এবং মিডল অর্ডারে ভরসা করার মতো একজন ব্যাটার পাবে। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই হয়তো দলে নেওয়া হয়েছে সাকিবকে।
সাকিবকে দলে নেওয়ার পরেই আইপিএল ট্রফি হাতে তার একটি ছবি পোস্ট করেছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজ। ছবিটি ২০১৪ সালে তোলা। সে বারই শেষ ট্রফি এসেছিল কেকেআরের ক্যাবিনেটে। সেই টুর্নামেন্টে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন সাকিব। মিডল অর্ডারে সাকিবের দ্রুত রান তোলার ক্ষমতা এবং মাঝের দিকের ওভারে কম রান দেওয়া এই বৈশিষ্টগুলোই সেবার অনন্য করে তুলেছিল সাকিবকে।
এরপর আরও পরিণত হয়েছেন সাকিব। বিপদের সময়ে টাইগারদের ভরসার এই অলরাউন্ডারের কাঁধে উঠেছে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্বের ভার। খুব উল্লেখযোগ্য পারফর্ম না করলেও এখনও বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডারের ট্যাগটা আছে তার নামের পাশে।
তবে এতোকিছু সত্ত্বেও দলের কম্বিনেশনের কারণে বিগত কয়েক মৌসুমে অনেক ম্যাচেই মাঠে নামতে পারেননি সাকিব। এবারও অনেকটা অনুমেয় যে, বেশিরভাগ ম্যাচেই সাকিবকে থাকতে হবে সাইডবেঞ্চে। কারণ তারকা অলরাউন্ডারের প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে থাকছেন আন্দ্রে রাসেল, ডেভিড উইজা ও সুনীল নারিনের মতো অলরাউন্ডার। এতো এতো বাধা পাড়ি দিয়ে সাকিব মূল একাদশে জায়গা করতে পারেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।