যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের এক মা তার অপহৃত মেয়েকে দীর্ঘ ৫১ বছর পর ফিরে পেয়েছেন। চাকরি করায় অন্য এক নারীকে নিজ মেয়েকে দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ওই নারী তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যান।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ ঘটনা নিয়ে সোমবার (২৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৩ আগস্ট মেলিসা হাইস্মিথ নামের ওই সময়ের এক বছরের ছোট্ট শিশু টেক্সাসের ফোর্ট ওর্থ থেকে অপহরণের শিকার হয়। এরপর হারিয়ে যাওয়া মেলিসাকে খুঁজে পেতে চেষ্টা চালাতে থাকেন তার পরিবারের সদস্যরা। এর অংশ হিসেবে তাকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে খুঁজে পাওয়া যায় এবং অবশেষে দীর্ঘ ৫১ বছর পর নিজের মেয়েকে ফিরে পান তার মা আল্টা আপানতেনকো।
মেলিসার মা আল্টা আপনতেনকো ১৯৭১ সালে তার মেয়েকে দেখাশোনা করার জন্য একজন শিশুপরিচারিকা চেয়ে পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দেন। সেই বিজ্ঞাপন দেখে ওই নারী মেলিসাকে দেখাশুনার দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু ওই নারীকে মেলিসার মা কখনো দেখেননি।
অপহরণের শিকার মেলিসাকে তখন ওই শিশুপরিচারিকার আড়ালে আসা অপহরণকারী নারীর হাতে তুলে দেন তার মায়ের রুমমেট। কিন্তু ওই নারী তাকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান এবং এরপর আর কখনো ফিরে আসেননি।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মেলিসার আত্মীয়স্বজনরা ইঙ্গিত পান চার্লসস্টোনের কাছে এমন একজন নারী আছেন যার সঙ্গে মেলিসার পরিবারের ডিএনএনের মিল আছে। চার্লসস্টোন টেক্সাসের ফোর্ট ওর্থ থেকে ১ হাজার ১০০ মাইল দূরে অবস্থিত। এরপর ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল, মেলিসার জন্ম দাগ এবং তার জন্মদিনসহ বেশ কয়েকটি বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা নিশ্চিত হন এই নারীই ৫১ বছর আগে অপহরণের শিকার হওয়া মেলিসা।
এরপর গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) মেলিসা তার বাবা, মা, বোন ও অন্যান্য আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করেন।
মেলিসার বোন সারন হাইস্মিথ জানিয়েছেন, তিনি একজন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি বিজ্ঞানীর সঙ্গে ডিএনএ পরীক্ষাসহ বিভিন্ন সহযোগিতা চেয়ে যোগাযোগ করেছিলেন। ওই বিজ্ঞানীই মেলিসার ডিএনএ-এর খোঁজ পান।
মেলিসার বোন সারন হাইস্মিথ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, তাকে খুঁজে পেতে তারা অনেক কষ্ট করেছেন। কিন্তু সব জায়গায় হয়রানির শিকার হয়েছেন। এখন সব কিছুর অবসান হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, মেলিসা অপহরণের শিকার হওয়ার পর তার মায়ের ওপর অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। তারা ভেবেছিলেন মেলিসার মা হয়ত তাকে হত্যা করে গুম করে ফেলেছেন।