ফিফার কঠিন শাস্তির মুখে সার্বিয়া

নিয়ম-শৃঙ্খলার ব্যাপারে শুরু থেকেই বেশ কঠোর ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। এই এক জায়গায় কোনোকিছুর সঙ্গে আপোস করতে রাজি নয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এবার তারই মুখোমুখি হলো কাতার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা দল সার্বিয়া। ইউরোপের দেশটিকে কঠিন শাস্তি দিতে যাচ্ছে ফিফা।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হেরে আসরে যাত্রা শুরু করে সার্বিয়ানরা। যার ফলে বিশ্বকাপে টিকে থাকার মিশনে বেশ চাপে রয়েছে দলটি। তবে এরই মধ্যে নিজেদের ড্রেসিং রুমে অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছেন সার্বিয়ান খেলোয়াড়রা। যার কারণে তাদের উপর বেশ চটে গেছে ফিফা।

জানা যায়,ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচের দিন সার্বিয়ান খেলোয়াড়রা নিজেদের ড্রেসিং রুমে তাদের পার্শ্ববর্তী দেশ কসোভোর মানচিত্রের পুরোটা সার্বিয়ার পতাকা দিয়ে ঢেকে দেন। সেই সঙ্গে ‘নো সারেন্ডার’ সম্বলিত একটি লেখা টানিয়ে দেন। কসোভোও যেহেতু ফিফার সদস্যভুক্ত দেশ, তাই শাস্তির মুখোমুখি পড়তে হচ্ছে সার্বিয়াকে।

এই ব্যাপারটা নিয়ে অবশ্য ফিফার কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে কসোভো ফুটবল ফেডারেশন। গত ২৫ নভেম্বর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ফিফার কাছে অভিযোগপত্র দায়ের করে। যেখানে তারা সার্বিয়ান ফুটবলারদের এমন কর্মকাণ্ডকে ‘উগ্র জাতীয়তাবাদী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

অভিযোগে কসোভা ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, ‘ফুটবলে এমন উগ্র জাতীয়তাবাদী কর্মকাণ্ড কখনোই আমরা কাম্য করি না। বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে একদমই এটা আশা করিনি। আমরা তাদের শাস্তি কামনা করছি। যাতে করে এমন কাজ তারা আর কখনো না করতে পারে।’

কসোভাকে অবশ্য অনেকের অপরিচিত লাগতে পারে। এই দেশটি ইউরোপ অঞ্চলের ক্ষুদ্রতম একটি দেশ। তারা ২০০৮ সালে সার্বিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। যে কারণে সার্বিয়ানরা তাদের উপর নাখোশ। এর মধ্যে সার্বিয়ানদের এমন কর্মকাণ্ড দুই দেশের ভেতর সম্পর্ক আরো খারাপ করতে পারে।

স্বাধীনতা লাভের পর ২০১৬ সালে ফিফা ও উয়েফার পূর্ণ সদস্যপদ পায় কসোভো। তবে এখনো বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে খেলতে পারেনি কসোভা। বাছাইপর্ব খেললেও তারা কখনো সার্বিয়ার মুখোমুখি হয় না। এমনই বৈরী দুই দেশের সম্পর্ক।

অন্যদিকে জানা গেছে, সার্বিয়া ফিফার শৃঙ্খলাজনিত আইনের ১১ নং অনুচ্ছেদ ভঙ্গ করেছে। এই অনুচ্ছেদে ফুটবল মাঠে উগ্রজাতীয়তাবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর থাকার কথা বলা হয়েছে। ফলে সার্বিয়ান ফুটবলাররা যে বড় শাস্তির মুখে পড়তে যাচ্ছেন, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই।