সু চির উপদেষ্টাসহ ছয় হাজার বন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে মিয়ানমার জান্তা

মিয়ানমারের প্রায় ৬ হাজার বন্দির সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুর করেছে জান্তা পরিচালিত সরকার। এর মধ্যে রয়েছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির সাবেক একজন উপদেষ্টাও।

জাতীয় ছুটির দিন উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক বন্দির সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুর করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির সামরিক নেতারা।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় ছুটির দিন উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ান অর্থনীতিবিদ এবং গণতন্ত্রের আইকন অং সান সু চির সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা শন টার্নেলসহ প্রায় ৬ হাজার বন্দির সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুর করা হয়েছে।

রয়টার্স বলছে, সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুরের ফলে মুক্তি পেতে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ভিকি বোম্যান ও তার স্বামী রয়েছেন। এছাড়া বৃহস্পতিবারের এ ঘোষণার ফলে মার্কিন নাগরিক কিয়াও হতে ওও ও জাপানি চলচ্চিত্র নির্মাতা তোরু কুবোতাও মুক্তি পাচ্ছেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। সেসময় অভ্যুত্থানের পরপরই চালানো অভিযানে অং সান সু চি-সহ বেসামরিক নেতাদের গ্রেফতার করে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেন, সরকার টার্নেলের মুক্তি সম্পর্কিত প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছে। মূলত অস্ট্রেলীয় এ অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় এবং গত সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারের আদালতে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল।

পেনি ওং টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, অধ্যাপক টার্নেল আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হিসাবেই থাকবেন। তবে আপাতত এ পর্যায়ে আমরা আর কোসো মন্তব্য করব না।

এছাড়া জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কুবোতার মুক্তির বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, মূলত মিয়ানমারের জাতীয় দিবস উপলক্ষে ৫ হাজার ৯৮ জন পুরুষ ও ৬৭৬ জন নারী বন্দিকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সামরিক বাহিনী। তখন গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে বন্দি করা হয়।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বিভিন্ন অভিযোগে করা সবগুলো মামলায় যদি সু চি দোষী সাব্যস্ত হন, সেক্ষেত্রে সবমিলিয়ে তার প্রায় ১৯০ বছরের সাজা হতে পারে। রাজধানী নেইপিদোর রুদ্ধদ্বার আদালতে সু চির বিরুদ্ধে চলছে বিচারকাজ। এর আগে, সেপ্টেম্বরে শন টার্নেলের সঙ্গে সু চিকেও ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।