আম্পায়ারের সাহায্যে বাংলাদেশকে হারালো ভারত, কোহলিদের জন্য কি সব বৈধ

আলোচনা-সমালোচনা, রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা কিংবা বিতর্কের জন্য হলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর সবার উপরেই জায়গা করে নেবে। অস্ট্রেলিয়ায় চলমান এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে কী হচ্ছে না। একের পর এক স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচ, নখ কামড়ানো ফলাফল, আপসেট সবই আছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে তো পরতে পরতে দৃশ্যপট বদলে গেছে।

যেখানে নিজেরা খারাপ খেলে ম্যাচটি হেরে গেছে বাংলাদেশ দল। মার্জিনালি কিছুটা এগিয়ে থেকে ৫ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে রোহিত শর্মার দল। তবে ম্যাচ হারলেও এই খেলা নিয়ে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশি সমর্থকদের মধ্যে। যেখানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, বিরাট কোহলি এবং ভারতের জন্য সব কি বৈধ?

ক্রিকেটীয় আবেগের জায়গা থেকে ভুল-শুদ্ধ মিলিয়ে নিজেদের মতামত দিতে থাকে দর্শক, সমর্থকরা। তবে চাইলে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের মধ্যকার এমন কিছু পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করা যায়, যেখানে সমর্থকদের প্রশ্নকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ থাকে না। অন্ততপক্ষে মাঠেই যখন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানই প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে পারেন না, তখন সমর্থকদেরই বা দোষ কী!

ম্যাচটিতে প্রথম আলোচ্য বিষয় ধরে নেওয়া যায় আম্পায়ারদের কোহলির প্রভাবিত করা। খালি চোখে অন্ততপক্ষে তাই মনে হবে। যদিও ক্রিকেট মাঠে আইসিসির বড় এক টুর্নামেন্টে যেকোনও ক্রিকেটার একজন আম্পায়ারকে প্রভাবিত করে ফেলবেন এটা নিশ্চিতভাবে অতি কল্পনা। কোহলির চাওয়ার পেছনে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের যৌক্তিক কারণও আছে বটে।

আর তাইতো হাসান মাহমুদের ওভারে দ্বিতীয় বাউন্সারে কোহলি চাহিবা মাত্র নো বল ডাকতে দেরি করেননি আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস। এমনকি বল ওভার দ্য শোল্ডার হাইটে যাওয়ামাত্র কোহলি লেগ আম্পায়ারের দিকে তাকিয়ে ওয়াইডে সিগন্যাল দিতেই দুই হাত প্রসারিত করে ফেলেন ক্রিস ব্রাউন। এক পর্যায়ে সাকিব তো কোহলির কাছে ছুটে গিয়ে হাসিমুখে জানিয়ে দেন, বারবার কেন এমন হচ্ছে!

অবশ্য মাঠে ক্রিকেটার কোহলির চাওয়ায় আম্পায়ার সাড়া দিতেই পারেন। ক্রিকেটীয় আইনে সেটি কোনো সমস্যা নয়। তবে সমস্যা হচ্ছে কোহলি যখন ভুল করেন, আর সেই ভুল ধরিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও আম্পায়ার কেন চোখে টিনের চশমা পরে থাকবেন?

বাংলাদেশ ম্যাচটি হেরেছে ৫ রানে। যে ৫ রান বাংলাদেশ সহজেই পেতে পারতো কোহলির ভুলের খেসারত হিসেবে। অ্যাডিলেইডে বাংলাদেশের ইনিংসের সপ্তম ওভারের সময় টাইগার ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে বিভ্রান্ত করতে ফেক ফিল্ডিংয়ের অঙ্গভঙ্গি করেন কোহলি। আক্সার প্যাটেলের বল ডিপ থার্ড ম্যান অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিয়ে ২ রান নেন লিটন। সেই সময় শান্তকে বিভ্রান্ত করতে ফেক ফিল্ডিংটি করেন কোহলি। তাও আবার লেগ আম্পায়ার এরাসমাসের একদম সামনে দাঁড়িয়ে।

কিন্তু আম্পায়ারের চোখেই নাকি পড়েনি বিষয়টি। এমনকি শান্ত যখন আম্পায়ারের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করে পেনাল্টি দাবি করেছেন, সেই মুহূর্তে তাদের উত্তর ছিল, এমন কিছু চোখে পড়েনি তাদের। সংবাদ মাধ্যমে সাকিব এবং সোহানের ভাষ্যে তেমনই জানা যায়। অথচ দিবালোকের মতো কোহলির সেই ফেইক ফিল্ডিংয়ের ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল।

তাহলে মাঠের আম্পায়ার কেনই বা টিভি আম্পায়ারের দ্বারস্থ হননি? নাকি কোহলি এবং ভারতের জন্য সব বৈধ? অন্যদিকে বলেও আম্পায়ারের মন গলাতে না পেরে ঠিকই ৫ রানের আক্ষেপে ভাসতে হয় শান্ত এবং বাংলাদেশের।