সমর্থকদের কোনো আশার বাণী না শুনিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় গেলেও শুরুটা দুর্দান্ত করেছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৯ রানে জয় পায় টাইগাররা।
এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে নেট রানরেটে বেশ পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
পরের ম্যাচে শেষ বলের নাটকীয়তায় জিম্বাবুয়েকে ৩ রানে হারিয়ে এখন সেমিফাইনালের স্বপ্ন বুনছে লাল-সবুজের দল।
যদিও সে স্বপ্নের বাস্তবায়নের পথ বেশ কঠিন।
কারণ, সুপার টুয়েলভে ‘বি’ গ্রুপের প্রথম তিন রাউন্ড শেষে পাঁচ দলের সামনে সুযোগ আছে শেষ চারে যাওয়ার। একমাত্র নেদারল্যান্ডসের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। টানা তিন ম্যাচ হেরেছে দলটি।
তবে সেমিফাইনাল নিশ্চিতে বাংলাদেশের সমীকরণ পাকিস্তান ও জিম্বাবুয়ের চেয়ে সহজ। নিজেদের বাকি দুই ম্যাচে ভারত ও পাকিস্তানকে হারালেই সেমির টিকিট কাটা হয়ে যাবে সাকিবদের। আর কোনো কিছুর দিকে অপেক্ষা করতে হবে না। তখন আর নেট রানরেটের দিকে খেয়ালই করতে হবে না বাংলাদেশ।
নেট রান রেট যেমনই থাক, পাঁচ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেমি-ফাইনালে উঠবে তারা।
কিন্তু ভারত ও পাকিস্তান, যে কোনো একটি ম্যাচে হেরে গেলে? তখনই সমীকরণ কঠিন হয়ে যাবে। বাংলাদেশকে তখন তাকিয়ে থাকতে হবে গ্রুপের অন্য ম্যাচগুলো দিকে।
বিষয়টি বুঝতে বর্তমান পয়েন্ট টেবিলের দিকে তাকাতে হবে।
তিন ম্যাচে দুটিতে জিতে ৫ পয়েন্ট নিয়ে শক্ত অবস্থানে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের নেট রানরেটও দুর্দান্ত ২.৭৭২। কোনো মতে একটি ম্যাচ জিতলেই সেমি নিশ্চিত প্রোটিয়াদের
এদিকে তিন ম্যাচে দুয় জয় ও এক পরাজয়ে সমান ৪ পয়েন্ট বাংলাদেশ ও ভারতের। তবে নেট রানরেটে এগিয়ে ভারত দ্বিতীয়।
ভারত যেখানে ০.৮৪৪ সেখানে বাংলাদেশ – ১.৫৩৩।
এরপর ৩ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে জিম্বাবুয়ে। তবে তাদের নেট রানরেট বাংলাদেশের চেয়ে বেশি – ০.০৫০। ৫ম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। তিন ম্যাচে একটি জয় ও দুটি পরাজয় তাদের। বাবর আজমদের পয়েন্ট মাত্র ২।
পয়েন্ট বলছে, শেষ দুই ম্যাচ বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত ভারতের।
টাইগাররা যদি পাকিস্তানের বিপক্ষে হারে এবং পাকিস্তান নিজেদের আরেক ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারায় তখন বাবর আজমদের পয়েন্ট হবে ৫ ম্যাচে ৬।
ভারত যদি বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়েকে হারায় তখন কোহলিদের পয়েন্ট হবে পাঁচ ম্যাচে ৮। তখন ৮ ও ৭ পয়েন্ট নিয়ে সেমিতে যাবে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
কিন্তু ভারত যদি বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতে কিন্তু জিম্বাবুয়ের কাছে হারে, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে ৭ কিংবা এর বেশি পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর ভারত যদি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জেতে এবং বাংলাদেশের কাছে হারে, তাহলে শেষ চারে চলে যেতে পারে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
অন্যদিকে শেষ দুই ম্যাচের একটিতে হারলেই সব আশা শেষ পাকিস্তানের। দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প নেই বাবর আজমদের সামনে। তাও আবার বড় ব্যবধানে হারাতে হবে এ দুটি দলকে। এরপর অন্যান্য ফলাফল পক্ষে এলে শেষ চারে যেতে পারবে বাবর আজমরা।
যেমন পাকিস্তান শেষ দুই ম্যাচ জিতল এবং বাংলাদেশের কাছে হেরে গেল ভারত। এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতল ভারত। এমনটি ঘটলে এশিয়ার ৩ দলেরই পয়েন্ট হবে ৬ করে।
রান রেটে কিছুটা এগিয়ে থাকায় তখন সেমি-ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকবে পাকিস্তানের।
জিম্বাবুয়ের অবস্থা পাকিস্তানের মতোই। শেষ দুই ম্যাচে একটিতে হারলেই বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে সিকান্দার রাজাদের।
বাকি দুই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস ও ভারত। দুটি ম্যাচই জিততে পারলে সেরা চারে উঠে যাবে তারা। এক ম্যাচ হারলেও শেষ হয়ে যাবে আশা।
শেষ চারের দৌড়ে বুধবার অ্যাডিলেডে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। যেখানে ৭০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে বৃষ্টির। তাই ভারতকে প্রকৃতির বাগড়া নিয়েও ভাবতে হবে।