গুজরাটের মোরবিতে মোচ্ছু নদীর ওপর ১৪০ বছর আগে (১৮৮০ সাল) ব্রিটিশরা সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছিল এই ঝুলন্ত ব্রিজ। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর টানা সাত মাস সংস্কার শেষে গত ২৬ অক্টোবর খুলে দেওয়া হয়েছিল ব্রিজটি। অবশ্য ব্রিজটি ফের খুলে দেওয়ার পর সেটির নির্মাণ সংস্থা জানিয়েছিল, আগামী ১৫ বছর ব্রিজটির সংস্কার করতে হবে না। তবে সংস্কারের ৫ দিনের মাথায় কীভাবে এতোবড় দুর্ঘটনা ঘটল বা ওই বিপুল সংখ্যক মানুষ একসঙ্গে উঠে পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা যায়, ৭৬৫ ফিট দৈর্ঘ্যের ব্রিজটিতে ছটপুজা উপলক্ষে ৪০০-৫০০ মানুষ উঠে পড়েছিল। আবার অনেকে বলছেন সেতুটি খুলে দেওয়ার পর থেকে উৎসুক মানুষজন প্রতিদিনই ভিড় করছিল। এই মর্মান্তিক পরিণতির ২৪ ঘণ্টা আগেই ওই সেতুতে ধরা পড়েছিল অন্য এক ছবি। শত শত লোক দাঁড়িয়ে ওই ঝুলন্ত সেতুতে।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই সোস্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, শত শত মানুষ ওই ব্রিজে উঠে পড়েছে। শুধু তাই নয় কেউ সেই ব্রিজে উঠে লাফাচ্ছেন, কেউ মারছেন রেলিংয়ে লাথি। প্রবলভাবে দুলতে থাকে সেতুটি। এমনই একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও ওই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শনিবার এই ছবি এবং ভিডও ধরা পড়েছিল ওই সেতুটিতে। সেখানে সেদিন প্রায় শ’খানেক মানুষের ভিড় ছিল। আর তার ঠিক পরের দিনই এই বিপর্যয় ঘটল।
এনডিটিভি সূত্রে খবর, রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৪২ মিনিটে ভেঙে পড়ে সেতুটি। ওই সময় ছটপুজো উপলক্ষে প্রায় ৫০০ মানুষের জমায়েত হয়েছিল। তা হলে কি অতিরিক্ত মানুষের চাপ সামলাতে না পেরেই ভেঙে পড়ল সেতুটি?
জানা গেছে, সংস্কারের পর গত ২৬ অক্টোবর সেতুটি জনসাধারণের জন্য আবার খুলে দেওয়া হয়েছিল। আর তার ৫ দিনের মাথায় এত বড় বিপর্যয় ঘটল।
প্রাণ বাঁচাতে কেউ কেউ সেতুর ভাঙা অংশের রেলিং ধরে ঝুলতে থাকেন। আবার কেউ নদীতে সাঁতরে ডাঙায় ওঠার চেষ্টা করেন। স্থানীয়দের দাবি, মৃতদের মধ্যে অধিকাংশ মহিলা ও শিশু।
এই ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন। মৃতদের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে গুজরাট সরকার।
এই খবর লেখা পর্যন্ত (সোমবার সকাল সাড়ে ৭টা) ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৩০ জনের। এখনো অনেকে নিখোঁজ। যে নদীতে ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে সেই মাচ্ছু নদীর পানিতে স্রোত রয়েছে। ফলে খুব সহজেই নদীতে পড়ে অনেকেই ভেসে গিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।