দুঃস্বপ্নের অতীত সরিয়ে রেখে স্বপ্নের শুরু! কিন্তু কে জানত তার পরের ম্যাচেই এসে এভাবে মুদ্রার আরেকটা পিঠও দেখে ফেলতে হবে? নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৯ রানের জয়ের আনন্দটা মাটিয়ে হয়েছে সিডনিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে জয় দূরে থাক, লড়াইটাও করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের ২০৫ রানের জবাবে যখন দল ১০১ রানে শেষ তখন মনোবল কোথায় যায় বলতে পারেন?
তবে এখন এতোশত ভাবার সুযোগ নেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আরেকটা লড়াইয়ের সামনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। রোববার ব্রিসবেনের গ্যাবায় প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। সেমি-ফাইনালে টিকে থাকার লড়াইয়ে পথে ম্যাচটাতে যে জিততেই হবে।
যে দলটার সঙ্গে অনেক দিনের দ্বৈরথ, একটা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আমেজ, তাদের বিপক্ষে এমন একটা ম্যাচ খেলার আগে অবশ্য সাকিব আল হাসানরা অনুশীলন থেকে নিজেদের দূরেই রেখেছিলেন। শনিবার ছুটিতে ছিল দল। ব্রিসবেনে এদিন শুধু অনুশীলনে দেখা মিলল দুই তরুণ নুরুল হাসান সোহান আর ইয়াসির আলি রাব্বিকে। যার দ্বিতীয় জন আগের ম্যাচেই জায়গা হারিয়েছেন একাদশে।
এমন একটা ম্যাচ খেলার আগের দিন গ্যাবায় পা পড়েনি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের। সংবাদ সম্মেলনে শুধু দেখা মিলল শ্রীধরন শ্রীরামের। দলের টিম অ্যানালিস্ট অবশ্য কোন প্রত্যাশার ফানুস ওড়ানোর পথে হাঁটেননি। সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘দেখুন, আমরা মূলত একটা দল হিসেবে গড়ে ওঠার চেষ্টা করছি। সেদিক থেকে সবকিছু ইতিবাচক। ছেলেদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য নিজেদের আরও শক্ত করছে, তারা জানে তাদের কোথায় যেতে হবে।’
ভবিষ্যৎ তো পরে, আগে তো বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষায় আছে জিম্বাবুয়ে ম্যাচ, সেটা নিয়ে কী ভাবছেন তিনি? বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলটা যার কাঁধে সেই ভারতীয় বলে চললেন, ‘অল্প সময়ে আমি মনে করি এসব জিনিস আমরা বেশ ভালোভাবেই করতে পারছি। আমরা আমাদের প্রত্যাশার জায়গায় ঠিকই আছি, ভবিষ্যতের জন্য একটা দল গড়ে তোলা, বেশ সামর্থ্যবান কিছু ক্রিকেটার আছে। আমি বিশ্বাস করি সময় দিলে আমরা ভবিষ্যতে একটা ভালো টি-টোয়েন্টি দল হিসেবে গড়ে উঠবো।’
তার মানে চোখ আগামীতেই রাখছেন তিনি। সঙ্গে অবশ্য একটুও যোগ করলেন, ‘আমরা জিম্বাবুয়েকে সমীহ করছি। তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। ঐ ম্যাচের প্রতিটি বল দেখেছি। যেভাবে তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলল এটা অবিশ্বাস্য। পুরো কৃতিত্ব তাদের দিতে হবে, পুরো সম্মানও।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের পারফরম্যান্সই ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে। সিকান্দার রাজারা শক্তিশালী দলটাকে ১ রানে হারিয়ে সেমির পথে কিছুটা কাজ সেরে নিয়েছে। দুই ম্যাচে একটা জয় আরেকটা পরিত্যক্ত। আর বাংলাদেশ একটিতে জয়ী, একটায় হার।
যদিও শ্রীরাম প্রতিপক্ষের এমন সাফল্য নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করতে রাজি নন। বলছিলেন, ‘জিম্বাবুয়ে সত্যিই অসাধারণ একটি ম্যাচ খেলেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে, ক্রেডিট অবশ্যই তাদের দিতে হবে। তবে আমরা পয়েন্ট টেবিল নিয়ে চিন্তিত না, আমাদের পুরোপুরি ফোকাস এখন পারফরম্যান্সে।’
অবশ্য ২০ ওভারের ক্রিকেটে এতোসব হিসাব আর অতীত পরিসংখ্যান কাজে আসে না। তারপরও একটা তথ্য কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিতে পারে সাকিবদের। এর আগে সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৯টা টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। যার ১২টিতেই জিতেছে দল। রোববার ব্রিসবেনের গ্যাবায় ১৩ নম্বর জয়টা এলে আনলাকি বলা যাবে না! কারণ এই জয়টাই যে বিশ্বকাপের শেষ চারের লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখবে বাংলাদেশকে!