সন্তানদের জন্য বাবা-মায়ের আত্মত্যাগ কখনো পরিমাপ করা যায় না। কিছু কিছু বাবা সন্তানদের জন্য নিজেদের সর্বস্ব বিসর্জন দেন। কিন্তু সবসময় সেই ত্যাগের যথাযথ মূল্য ও সম্মান পান না তারা। সেই রকম আত্মত্যাগের এক হৃদয়বিদারক কাহিনি বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছেন আমান্ডা চিন্ডা নামক নাইজেরিয়ার এক নারী।
আমান্ডা বলছে, মেয়েকে প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত করে তোলা একজন বাবার স্বপ্ন ছিল। অভাবের সংসার হলেও মেয়ের পড়াশোনায় কখনো কোনো সংকট আসতে দেননি তিনি। মেয়ে যত বড় হচ্ছিল তত তার পড়াশোনার খরচও বাড়ে। এক সময়ে মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে রীতিমতো হিমশিম খান বাবা। বাবাও নাছোড়বান্দা। তাই মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যেতে যা করতে হয় তিনি তাই করবেন বলে ঠিক করেন।
অনেক ভেবে মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাতে নিজের কিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। কিডনি বিক্রি করে তিনি যা টাকা পাবেন, তা তিনি রেখে দেবেন। এ টাকায় তাঁর মেয়ের সারাজীবনের পড়াশোনার খরচ চলে যাবে। তবে তিনি ভাবতে পারেননি তার পড়াশোনায় ভালো মেয়ের মনে সেই মুহূর্তে একজন পুরুষ জায়গা করে নিয়েছে। প্রেমিকের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই চুটিয়ে প্রেম করছিলেন সেই মেয়ে। এরইমধ্যে কিডনি বিক্রি করে মেয়ের কলেজের বেতন জমা দেন বাবা। বেতন জমা দেওয়ার পর বাড়ি ফিরে আসেন খুশি মনে। এর কিছু দিনের মধ্যেই মেয়ে ও তার প্রেমিকের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। মেয়েটিকে ছেড়ে যায় তার প্রেমিক। প্রেমিকার ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি মেয়ে। মনের দুঃখে আত্মহত্যা করে সে। বাবার আত্মত্যাগ না ভেবেই আত্মহত্যা করে মেয়ে। ভেঙে চুরমার হয় মেয়েকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য বাবার সেই স্বপ্ন।
মেয়ের আত্মহত্যা করার পর তার বাবা ভেঙে পড়েন। মেয়ের উপর রাগ-অভিমানও হয়। যদি তিনি জানতেন, মেয়ে আত্মহত্যা করবে তাহলে নিজের কিডনি বিক্রি করতেন না বলেও জানান তিনি।