ভারতের সর্বদক্ষিণের রাজ্য কেরালার কোচি বন্দরের শ্রীলঙ্কার পতাকাবাহী একটি মাছ ধরার নৌকা থেকে ২০০ কেজি আফগান হেরোইনের একটি চালান জব্দ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (এনসিবি), কোস্টগার্ড ও দেশটির নৌবাহিনীর সেনাসদস্যরা।
এনডিটিভিসহ ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, জব্দকৃত এই হেরোইনের বাজারমূল্য ১ হাজার ২০০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা)। ওই নৌকাটি থেকে ৬ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সবাই ইরানের নাগরিক।
এনসিবির জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সিং এনডিটিভিকে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ৬জন জানিয়েছেন এসব হেরোইন উৎপাদন করা হয়েছে হয়েছে আফগানিস্তানে এবং সেখান থেকে পাকিস্তান হয়ে কেরালার কোচি বন্দরে আসা এই নৌকাটি মূলত একটি ইরানি নৌকা; কোচি বন্দরে শ্রীলঙ্কার নৌকা নোঙ্গর করার অনুমতি থাকায় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশয় ইরানি এই নৌকাটিকে শ্রীলঙ্কার নৌকার আকৃতি দিয়েছিল পাচারকারীরা।
তিনি আরও জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নৌকাটি আটক ও তল্লাশি চালানার সময় সেটির ভেতর পানি নিরোধক বেশ কয়েকটি স্তর দেখা যায়। এমন ৭টি স্তরে এসব হেরোইনের প্যাকেট থরে থরে সাজানো ছিল।
‘গ্রেপ্তার পাচারকারীরা জানিয়েছেন, আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানের করাচি বন্দরে পৌঁছানোর পর প্রথমে পাকিস্তানি একটি নৌকায় নেওয়া হয়েছিল এসব হেরোইনের প্যাকেট, তারপর কোচিতে আসার পথে মাঝ সমুদ্রে পাকিস্তানি সেই নৌকাটি থেকে এই নৌকায় সেসব হেরোইন স্থানান্তর করা হয়।’
‘গোপন সূত্রে খবর পাওয়ার পর কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী যখন নৌকাটিকে ধাওয়া করছিল, সেসময় কয়েকজন পাচারকারী গ্রেপ্তার এড়াতে নৌকা থেকে লাফিয়ে সমুদ্রে পড়েছিল, কয়েকজন এসব হেরোইন সমুদ্রে ডুবিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
মূলত ভারত ও শ্রীলঙ্কায় বিক্রির উদ্দেশে এই চালান এসেছিল উল্লেখ করে সঞ্জয় কুমার সিং বলেন, ‘পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মাদক কারবারিরা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে মাদক সরবরাহ করতে গত কয়েক বছর ধরে আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছে।’
‘আফগানিস্তানে উৎপাদিত হেরোইন প্রথমে ইরানের মাকরান উপকূলীয় শহরে পাচার হয়, তারপর সেখান থেকে পাকিস্তান হয়ে সমুদ্রপথে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় আসে।’