ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ থামার নাম নেই। বরং এটি আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।
এর মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দেন, যাদের সামরিক অভিজ্ঞতা রয়েছে প্রয়োজনে তাদের ডাকা হবে। এ পরিস্থিতিতে ফিনল্যান্ডে পালিয়ে যাচ্ছে দেশটির নাগরিকরা।
বিশেষ করে তরুণ ও যুবক রুশ নাগরিকরা নিজের দেশ ছাড়ছেন। এতে রুশ সীমান্তে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রোববার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ফিনল্যান্ডে প্রবেশ করেছে রেকর্ড সংখ্যক রুশ নাগরিক। ফিনিশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে গত সপ্তাহে যে পরিমাণ রুশ নাগরিক তাদের সীমান্তে এসেছেন, রোববার তার দ্বিগুণ মানুষ প্রবেশ করেছে।
ফিনিশ বর্ডার গার্ডের আন্তর্জাতিক বিষয়ক প্রধান ম্যাটি পিটকানিটি নিজের টুইটারে পোস্ট করে জানান, রোববার ৮ হাজার ৩১৪ জন রুশ নাগরিক ফিনিশ-রাশিয়ান স্থলসীমান্ত দিয়ে ফিনল্যান্ডে প্রবেশ করেছে। শনিবারসহ এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮৮৬।
এর আগে রুশ নাগরিকদের ফিনল্যান্ডে প্রবেশের বিষয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যান্টি কাইকোনেন বলেছিলেন, তারা বর্তমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
এমন অবস্থায় সীমান্ত বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও এখনও এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ক্রেমলিন। মঙ্গলবারের (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদনে আল জাজিরা আরও জানায়, রাশিয়া ছেড়ে পালাতে চাওয়া সাবেক সামরিক সদস্য ও পুরুষদের দেশত্যাগের ঘটনায় রাশিয়া নিজেদের সীমান্ত বন্ধ করবে কিনা, সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তের তথ্য পাওয়া যায়নি। মস্কো এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি।
সীমান্ত বন্ধ হওয়ার ব্যাপারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও জানান, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। এবং মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
তবে, সহস্রাধিক মানুষকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে রাশিয়া থেকে। এর কারণ, রুশ বাহিনীর রিজার্ভ সেনাদের তলবের প্রতিবাদ। যারা যুদ্ধে যেতে চাইছেন না, মূলত তারাই প্রতিবাদ করছেন। সেনাসমাবেশের বিরোধিতা করা একটি অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন তিন লাখ ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। তাদের ভাষ্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা তাদের দাদা-নানা, বাবা-ভাই, স্বামী-বন্ধুদের নৈতিক বা শারীরিক বিপদে ফেলতে প্রস্তুত নন।
শুধু যে ফিনল্যান্ড সীমান্তে রুশ নাগরিকরা জড়ো হচ্ছেন, তা নয়। জর্জিয়া সীমান্তেও রাশিয়া ত্যাগের জন্য দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া কাজাখস্তান ও মঙ্গোলিয়ার সীমান্ত ক্রসিংয়ের রাস্তায়ও গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। বিক্ষোভ ও দেশ ত্যাগের ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মী, ব্যাংকার আর গণমাধ্যমকর্মীদের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। কিন্তু তাতেও নাগরিকদের দেশত্যাগ থামানো যাচ্ছে না বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়।
এ অবস্থায় সেনাসদস্য হিসেবে নিয়োগের জন্য নির্ধারিত বয়সের প্রত্যেকেরই বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে রুশ-অধিভুক্ত ক্রিমিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী সিনিয়র আইনপ্রণেতা সের্গেই সেকভ।