মিয়ানমারের একটি স্কুলে হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে ওই স্কুলের ছয় শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ১৭ জন।
এ সময় সেনাসদস্যারা স্কুলটির ২০ শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে আটক করে নিয়ে গেছে। খবর রয়টার্স, ইরাবতী ও টেলিগ্রাফের।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শুক্রবার সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার যখন হামলা চালায়, সেই সময় ক্লাস চলছিল স্কুলটিতে।
ওপর থেকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় অন্তত চার শিক্ষার্থী এবং আহত অন্যদের নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মারা যায় আরও দুজন।
স্কুলে গুলিবর্ষণের পাশাপাশি ‘সন্ত্রাসীদের’ খুঁজতে লেত ইয়েত কোন গ্রামে সেনাবাহিনীর একটি দল তল্লাশি চালিয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওই গ্রামের দুই বাসিন্দা। নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের নাম প্রকাশ করেনি গণমাধ্যম।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ হামলা ও তল্লাশি অভিযানের ছবি পোস্ট করেছেন অনেকেই। সেসব ছবিতে ওই স্কুলের বুলেটবিধ্বস্ত দেয়াল ও বিভিন্ন স্থানে রক্তের ছাপ দেখা গেছে।
সোমবার এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন জান্তাবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মি (কিয়া) ও পিপলস ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (পিডিএফ) ‘সন্ত্রাসীরা’ দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ের লেত ইয়েত কোং গ্রামের ওই স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছে— এই তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে।
গ্রামটিকে ‘সন্ত্রাসীরা’ তাদের অস্ত্র পরিবহনের রুট হিসেবে ব্যবহার করে বলেও দাবি করা হয়েছে বিবৃতিতে।
সন্ত্রাসীরা গ্রামের সাধরণ মানুষকে ‘মানববর্ম’ হিসেবে ব্যবহারের কারণে হতাহতের এ ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। পাশপাশি ওই স্কুল ও গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ১৬টি হাতে বানানো বোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে সেনাবাহিনী।
এদিকে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ছায়া সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (নাগ) পাল্টা এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে নিরীহ বেসামরিক লোকজনের ওপর হত্যা-নিপীড়ন চালাচ্ছে জান্তা। আটক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে নাগ।