দুই দিনের ব্যবধানে বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণের দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৯৮৩ টাকা বাড়িয়ে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮৪ হাজার ৩৩১ টাকা হয়েছে।
আগামীকাল (রোববার) থেকে স্বর্ণের এই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এর আগে চলতি বছরের ২২ মে সবচেয়ে ভালো মানের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮২ হাজার ৪৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এতদিন এটিই ছিল দেশের ইতিহাসে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।
ভালো মানের স্বর্ণের পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে সব ধরনের স্বর্ণের দাম। মান অনুযায়ী প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ২৮৩ টাকা থেকে ১ হাজার ৯৮৩ টাকা পর্যন্ত। তবে রূপার দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি শনিবার (৬ আগস্ট) বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তী সময়ে কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম বেড়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এর আগে ৪ আগস্ট এবং ২৭ ও ২৯ জুলাই স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এ হিসেবে ১০ দিনের ব্যবধানে চার দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলো।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৮৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪ হাজার ৩৩১ টাকা করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনো এত দামে স্বর্ণ বিক্রি হয়নি।
এদিকে ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৮৬৭ টাকা বাড়িয়ে ৮০ হাজার ৪৮২ টাকা করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫৭৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৮ হাজার ৯৯৩ টাকা করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ২৮৩ টাকা বাড়িয়ে ৫৬ হাজার ৯৭৯ টাকা করা হয়েছে।
স্বর্ণের দাম বাড়লেও রুপার আগের নির্ধারিত দামই বহাল রয়েছে। ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপার মূল্য এক হাজার ৫১৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম এক হাজার ৪৩৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক হাজার ২২৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার দাম ৯৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ৪ আগস্ট ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৮২ হাজার ৩৪৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৪৯ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৬১৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৬৭ হাজার ৪১৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৫২৫ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ হাজার ৬৯৬ টাকা করা হয়।
তার আগে ২৯ জুলাই ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৭৪১ টাকা বাড়িয়ে ৮১ হাজার ২৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৫৬৬ টাকা বাড়িয়ে ৭৭ হাজার ৫৬৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯২৫ টাকা বাড়িয়ে ৬৬ হাজার ৪৮৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ২ হাজার ৪৫০ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ হাজার ১৭১ টাকা করা হয়।
এর দুদিন আগে ২৭ জুলাই সবচেয়ে ভাল মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৩৪১ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৭৮ হাজার ৫৫৭ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ২৮৪ টাকা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৩৪১ টাকা বাড়িয়ে ৬৪ হাজার ৫৬০ টাকা করা হয়। সে সময় অপরিবর্তিত রাখা হয় সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম।
তার আগে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুলাই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়। সে সময় সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে করা হয় ৭৭ হাজার ২১৬ টাকা।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৭ টাকা কমিয়ে ৭৩ হাজার ৭১৬ টাকা করা হয়। ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৬৩ হাজার ২১৯ টাকা করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫৮ টাকা কমিয়ে করা হয় ৫২ হাজার ৭২১ টাকা।
গত ৭ জুলাই আরও এক দফা স্বর্ণের দাম কমায় বাজুস। সে সময় সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে করা হয় ৭৮ হাজার ৩৮২ টাকা।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ৭৪ হাজার ৮৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৬৪ হাজার ১৫২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫৯ টাকা কমিয়ে ৫৩ হাজার ৪৭৯ টাকা করা হয়।