শ্রীলঙ্কায় বাড়ছে পতিতাবৃত্তি, কেন জানুন

স্বাধীনতার পর থেকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। রপ্তানি কমে যাওয়ায় বহু নারীকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দেওয়ার আশায় অনেক নারী বাধ্য হয়ে পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ছেন। ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

দেশটির পতিতাদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন স্ট্যান্ড-আপ মুভমেন্ট লঙ্কা (এসইউএমএল) জানায়, গত কয়েক মাসে পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ার হার ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এসব নারীর অনেকেই স্পা এবং বিভিন্ন পার্লার সেন্টারে পতিতাবৃত্তিতে লিপ্ত রয়েছেন।

সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়া অধিকাংশ নারীই গার্মেন্টস শ্রমিক। করোনা মহামারীর পর অধিকাংশ গার্মেন্টস কারখানা থেকে নারী শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিতান্ত বাধ্য হয়ে তারা পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়েছেন।

অনেক নারী এএনআইকে জানান, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেদের পরিবারের মুখে তিন বেলা খাবার তুলে দেওয়ার এটিই একমাত্র উপায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২১ বছর বয়সী এক নারী এএনআইকে বলেন, তিনি আগে গার্মেন্টসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ডিসেম্বর মাসের শেষ নাগাদ তার চাকরি চলে যায়। তখন দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে অন্যত্র কাজ করতেন। সাধারণত, সেখানে শ্রমিক কম থাকলে তাকে ডাকা হলে গিয়ে কাজ করতেন।

কিন্তু নিয়মিত বেতন না পাওয়ার কারণে পরিবারের সদস্যদের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারতেন না। তারপর একটি স্পা সেন্টারের মালিক তাকে পতিতাবৃত্তিতে কাজের অফার দেন। তখন পতিতাবৃত্তিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যদিও এ কাজে জড়িয়ে পড়তে তার মন বাধা দিয়েছিল। কিন্তু পরিবারের জন্য অর্থের নিশ্চয়তার জন্যই তিনি এ পেশায় জড়িয়ে পড়েন।

অর্থনৈতিক দুর্দশার পাশাপাশি আগে যেসব নারী প্রতি মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করতেন, বর্তমানে পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ার কারণে প্রতিদিন তারা ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করতে পারছেন। এটিকেও নারীদের পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ার বড় কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য প্রোগ্রাম (ডব্লিউইপি) এর শ্রীলঙ্কার ডিরেক্টর আব্দুর রহিম সিদ্দিকি বলেন, ‘দেশটির ৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে। স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমানে দেশটি সবচেয়ে বেশি খাদ্য সংকটে ভুগছে। গত মাস পর্যন্ত দেশটিতে খাদ্যের মুদ্রাস্ফীতি ৮০ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া আগামী মাসগুলোতে খাদ্যপণ্যের দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।