বাইডেন সৌদি আরবে, সালমানের সঙ্গে ‘মুঠো ঠোকাঠুকি’

আলোচিত সফরে শুক্রবার সৌদি আরবে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ধারণা করা হচ্ছে, জ্বালানির ক্রমবর্ধমান মূল্যে লাগাম টানা এবং ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যেই এ সফরে গেছেন বাইডেন।

এবারই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট সরাসরি ফ্লাইটে ইসরায়েল থেকে সৌদি আরব রাষ্ট্রের মাটিতে পা রাখলেন। এর আগে ২০১৭ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে সৌদি আরব এবং পরে ইসরায়েলে যান।

সৌদির উপকূলীয় শহর জেদ্দায় অবতরণ করে বাইডেনকে বহনকারী বিশেষ বিমান এয়ারফোর্স ওয়ান। তাঁকে স্বাগত জানান মক্কা প্রদেশের গভর্নর প্রিন্স খালেদ আল-ফয়সাল এবং প্রিন্সেস রিমা বিনতে বন্দর আল-সৌদ। পরে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গেও দেখা যায় বাইডেনকে।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, যুবরাজ সালমান ‘ফিস্ট বাম্প’ (পরস্পরের হাতের মুঠো ঠেকানো) দিচ্ছেন বাইডেনকে। উল্লেখ্য, সংক্ষেপে এমবিএস নামেও পরিচিত মোহাম্মদ বিন সালমানকেই দেশটির প্রকৃত শাসক বলে মনে করা হয়।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কভিড সাবধানতার অংশ হিসেবে করমর্দন করছেন না বাইডেন।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার ঘটনার সরব সমালোচক ছিলেন বাইডেন। ২০২১ সালের শুরুতে তাঁর প্রশাসন প্রথমবারের মতো এ সম্পর্কিত মার্কিন গোয়েন্দা অনুসন্ধান প্রতিবেদনও প্রকাশ করে। তাতে যুবরাজ সালমানের পরোক্ষ ভূমিকার কথা বলা হয়েছে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। সেই বাইডেন সৌদি সফরে আসা স্বদেশে বিস্ময় ও নিন্দার জন্ম দিয়েছে।

বাইডেনের মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনার সমালোচনার জবাবে হোয়াইট হাউস বলেছিল, শনিবার এক সম্মেলনে তিনি আরো অনেক আরব নেতার সঙ্গেই বসবেন।

কৌশলগত কারণে সৌদি আরবের সঙ্গে বাইডেন সম্পর্ক ভালো রাখতেই আগ্রহী বলে ধারণা করা হচ্ছে। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত মিত্র এ রাষ্ট্রটি। মার্কিনীদের প্রধান তেল সরবরাহকারী ও অস্ত্র ক্রেতাও সৌদি আরব। ওয়াশিংটন এখন চাইছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল রপ্তানিকারক দেশটি উৎপাদন বাড়িয়ে জ্বালানি ব্যয় কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করুক।

এ ছাড়া মার্কিন কর্মকর্তারা ইসরায়েল ও সৌদির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টার কথা জানিয়েছেন। তবে, সৌদি আরব আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার আব্রাহাম অ্যাকর্ডে যোগ দেওয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ওই চুক্তির মাধ্যমে সাম্প্রতিককালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে ইসরায়েল।

এবারের সফরে ৮৬ বছর বয়সী সৌদি বাদশাহ সালমানের সঙ্গেও দেখা করার কথা রয়েছে বাইডেনের। সূত্র : এএফপি।