কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের ভোটে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মেয়র পদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির দুই সাবেক নেতা মনিরুল হক সাক্কু ও নিজাম উদ্দিন কায়সার। বুধবার ভোটগ্রহণ শেষে বিকাল ৪টার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে তারা এই সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তারা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ নিয়ে প্রশংসাও করেছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র পদপ্রার্থী সাক্কু বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ খুবই সুন্দর হয়েছে। ইভিএমের কারণে ভোট কাস্টিং কম হয়েছে। অনেকে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। আমি তো মনে করেছিলাম, ইভিএম শুধু জাতীয় নির্বাচনের জন্য। কিন্তু সিটি নির্বাচনের মাত্র ১০০ কেন্দ্রেই যে জটিলতা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনে তো হাজার হাজার কেন্দ্র থাকবে। এটা ইভিএমে যদি হয়, তাহলে কী হবে তা এখনই বুঝা যাচ্ছে।
আরেক মেয়র পদপ্রর্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, ‘খুবই ভালো নির্বাচন হয়েছে। এখন যদি ইভিএমে কারচুপি না হয় তাহলে আমার পক্ষেই রায় আসবে। ঘোড়া প্রতীকে যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে- ইভিএমে কোনো কারিগরি না করা হলে তা ফলাফলে প্রতিফলন ঘটবে।’
নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদও জানান নিজাম।
বুধবার কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এখন চলছে ভোট গণনা। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে।
এর আগে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১০৫টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে চলে ভোটগ্রহণ।
নির্ধারিত সময়ের বেশ আগে থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। তবে, ভোটগ্রহণ শুরুর প্রথম ঘণ্টায় বৃষ্টির বাগড়ায় ভোগান্তিতে পড়েন ভোটাররা। এরপর মোটামুটি পুরোদিনই আকাশ মেঘলা ছিল।
নির্বাচনে কোনো সহিংসতার খবর না পাওয়া গেলেও কিছু জায়গায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে) ভোট দিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন অনেকে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট না মেলা, এক বুথের ভোটাররা অন্য বুথে যাওয়া নিয়ে এমন ভোগান্তির সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ উঠেঠে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রায় সব কেন্দ্রেই ইভিএম ছিল ধীর গতির। এ কারণে সময় বেশি নিয়ে ভোট পড়ায় দিন শেষেও লম্বা সারিতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ভোটারদের। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইভিএম সম্পর্কে ভোটারদের ধারণা না থাকার বিষয়টি। ফলে অনেককে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচন আয়োজন নিয়ে ইতোমধ্যে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ইসি চিঠি দেওয়ার পরও কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য এলাকা না ছাড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কুমিল্লায় নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্ব প্রকাশ পেয়েছে।
কুসিকের ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এদের মধ্যে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন নারী ভোটার এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে দুজন।