সরকারি কর্মকর্তাদের যেসব সুবিধা বাতিল করছে পাকিস্তান

পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল গতকাল শুক্রবার বলেছেন, ধনীদের ওপর করের হার বাড়াবে তার দেশের সরকার। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারি কর্মকর্তাদের নতুন গাড়ি কেনার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

২২ কোটি জনসংখ্যার দেশটির অর্থনীতি চরম সংকটের মুখে পড়েছে এবং বৈদেশিক রিজার্ভ ১০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। সে দেশের যে রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে, তা পূরণে এবং ৪৫ দিনের জন্য আমদানিতে বড় ধরনের সংকট রয়েছে।

তীব্র জ্বালানি সংকট ও রাষ্ট্রীয় খরচ কমাতে কঠোর ব্যয় সংকোচননীতি গ্রহণ করেছে পাকিস্তান। এর আগে গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঋণের খাদে পড়া অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী-আমলাদের বিদেশে চিকিৎসা, সরকারি পর্যায়ে গাড়ি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) কেনা ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুপুরের খাবার, রাতের খাবার, দামি চা কেনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এসবের পাশাপাশি জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় রাত ১০টার পর রাজধানী ইসলামাবাদে বিয়ের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত বুধবার থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে।

জিও টিভি জানিয়েছে, খরচ কমাতে সরকারি অফিসে শনিবারও সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে ঘোষণা করতে একমত হয়েছে মন্ত্রিসভা। জ্বালানি সাশ্রয়েও বিকল্প খুঁজছে দেশটির সরকার।

রাত ১০টার পর ইসলামাবাদে বিয়ের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য শুধু এক ধরনের খাবার পরিবেশনের অনুমতি দেওয়া হবে। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর দেশটির তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল ও গ্যাসের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধিতে ঘাটতি মোকাবেলায় জ্বালানি সংরক্ষণের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। অর্থ বিভাগও তাদের পরিকল্পনা পেশ করেছে। মন্ত্রী ও সরকারি কর্মচারীদের জ্বালানি কোটা ৪০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

পরিকল্পনা অনুসারে গুরুত্বপূর্ণ সফর ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশে চিকিৎসা নেওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্মকর্তাদের আগের মতো দুপুরের খাবার, রাতের খাবার, এমনকি চা-ও পরিবেশন করা হবে না।

সরকারি পর্যায়ে গাড়ি কেনার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সরকারি বৈঠকগুলো ভার্চুয়ালি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সূত্র : এনডিটিভি।