পাকিস্তানে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

পাকিস্তানের আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে ২০২৩ সালের আগস্টে। তবে তার আগ পর্যন্ত ইমরান খানের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসতে রাজি নয় দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকার।

এ জন্য আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত পূর্ব অনুমতি ছাড়া রাজধানী ইসলাবাদে রাজনৈতিক দলের মিছিল-সমাবেশ আইন করে নিষিদ্ধ করতে চায় ক্ষমতাসীন সরকার। এ বিষয়ে ইসলামাবাদে আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মধ্যে রোববার বৈঠকও হয়েছে।

রবিবার রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের পরবর্তী নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেন দেশটির তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব।এ সময় তিনি ইমরান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার সঙ্গে আমরা আর কোনো আলোচনায় যেতে চাই না; যেহেতু আপনি নির্বাচনের সময় জানতে চেয়েছিলেন, তাই বলছি— মনযোগ দিয়ে শুনুন এবং লিখে রাখুন—আগামী পার্লামেন্টারি নির্বাচন হবে ২০২৩ সালের আগস্টে।’

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইসলামাবাদে এক দলীয় সমাবেশে আগামী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য ৬ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই ইনসাফ পাকিস্তানের (টিআইপি) চেয়ারম্যান ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, যিনি গত এপ্রিলের প্রথম দিকে পার্লামেন্টে বিরোধীদের অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারিয়েছেন।

বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়ে ইমরান খান বলেছিলেন, পরবর্তী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করা হলে ৬ দিন পর পুরো জাতিকে নিয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করবেন তিনি।

রোববার ইমরানের সেই আল্টিমেটামেরই জবাব দিলেন মরিয়ম, পাশাপাশি বর্তমান বিরোধী নেতার সঙ্গে আলোচনায় না যাওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

‘যখন আমরা আপনার সঙ্গে অর্থনীতি, কোভিড মহামারি, জঙ্গি তৎপরতা ও জাতীয় নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে চাইতাম, তখন আপনি বলতেন—আমাদেরকে কোনো এনআরও (ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন অর্ডিন্যান্স, এ অধ্যাদেশে রাজনীতিকদের সঙ্গে মানবিক ব্যবহারের বিষয়ে বলা হয়েছে) দেওয়া হবে না। এবার আমি বলছি— আপনাকেও আমরা কোনো এনআরও দেবো না।’

অনুমতি ছাড়া রাজধানীতে নিষিদ্ধ মিছিল-সমাবেশ

রাজধানী ইসলামাবাদে রাজনৈতিক সমাবেশ ও মিছিল স্থায়ীভাবে বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার। রোববার দেশটির বর্তমান আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দেশটির বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ।

বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল যদি রাজধানীতে মিছিল-সমাবেশ করতে চায়, তাহলে অবশ্যই সেই দলকে পুলিশের অনুমতি নিতে হবে এবং অবশ্যই পুলিশ ওপর হামলা থেকে বিরত থাকা রাষ্ট্রের কোনো সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি না করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের রানা সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমরা দেশকে দুর্বৃত্তদের হাতে জিম্মি হতে দিতে পারি না, অন্যদিকে— আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের ওপর হামলাও কোনোভাবেই কাম্য নয়। মূলত রাজধানীকে দাঙ্গামুক্ত রাখতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ সূত্র: এএনআই