সৌদি আরবে বাংলাদেশি যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু

সৌদি আরবের আল গাসিম এলাকায় শরীফ হোসেন (২২) নামে এক বাংলাদেশি যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, তাকে হ’ত্যা করা হয়েছে। নিহত শরীফের বাড়ি কমলনগর উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের জাজিরা এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মো. সিরাজের ছেলে। সৌদিতে বাংলাদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন ও লাশ ফেরত আনতে গত বৃহস্পতিবার কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন করেছে পরিবার।

পরিবার ও আবেদন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭ মাস আগে কমলনগরের হাজিরহাট ইউনিয়নের সৌদি আরবে কর্মরত আলাউদ্দিনের মাধ্যমে খেজুরের বাগানে কাজ করার জন্য সেদেশে যান শরীফ। শরীফকে খেজুরের বাগানে কাজ দেয়ার কথা থাকলেও একটি কসাইয়ের দোকানে চাকরি দেয়। ওই দোকানের মালিক তাকে প্রায় মারধর করে বলে শরীফ তার পরিবারকে জানান। বিষয়টি শরীফের বাবা আলাউদ্দিনকে মোবাইলফোনে জানালে তিনি কোনো গুরুত্ব দেয়নি। কিছুদিন পরে আলাউদ্দিন ছুটিতে দেশে চলে আসেন। আলাউদ্দিন ছুটিতে আসার পর থেকে শরীফের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

উপায় না পেয়ে শরীফের পরিবার আলাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই সময় আলাউদ্দিন জানায়, তাদের ছেলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহ’ত্যা করেছে। পরে চলতি বছরের ৮ই মার্চ শরীফের বাবা আলাউদ্দিনকে অভিযুক্ত করে কমলনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা যাচাই-বাছাই করে শরীফের লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য আলাউদ্দিনকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। এর কিছুদিন পরই আলাউদ্দিন সৌদিতে চলে যায়।

তিনি সৌদিতে গিয়ে শরীফের লাশ ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আর কোনো যোগাযোগ করেনি। নিহত শরীফের বাবা মো. সিরাজ বলেন, ধারদেনা করে ছেলেকে সৌদিতে পাঠিয়েছি। খেজুরের বাগানে কাজ দেয়ার কথা থাকলেও কসাইয়ের দোকানে কাজ দিয়েছে। ওই মালিক প্রায় আমার ছেলেকে নির্যাতন করতো। বিষয়টি আলাউদ্দিনকে জানালে কোনো কর্ণপাত করেনি। এখন শুনছি আমার ছেলে মারা গেছে। আমি এর সঠিক বিচার ও আমার ছেলের লাশ চাই।

এদিকে আলাউদ্দিনকে না পেয়ে তার স্ত্রী ফেরদাউস বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সৌদিতে লাশ ফেরত পাঠানোর সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন শুধু স্থানীয় চেয়ারম্যানের একটি প্রত্যয়নপত্র পাঠালে তার লাশ দ্রুত চলে আসবে। এ ছাড়াও শরীফের সঙ্গে এলাকায় এক মেয়ের প্রেম ছিল।

ওই মেয়ে আরেক ছেলের সঙ্গে ফটো তুলে শরীফকে পাঠালে ক্ষোভে সে আত্মহ’ত্যা করে। বিষয়টি এলাকার সবাই জানে। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, আমার কাছে শরীফ নামে এক যুবকের লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আবেদন করেছে তার বাবা। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।