মাহিন্দা রাজাপক্ষ শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার পরই আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে সেদেশের পরিস্থিতি। দেশজুড়ে কার্যত গৃহযুদ্ধে আবহ তৈরি হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হামলার মুখে পড়ে প্রাণ গিয়েছে শাসকদলের এক পার্লামেন্ট সদস্যদের।
এদিকে, বেছে বেছে শাসকদলের নেতা এবং মন্ত্রীদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেও কোনও লাভ হচ্ছে না।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে মাহিন্দা রাজাপক্ষ ইস্তফা দিলেও জনরোষ কিছুতেই বাগে আসছে না। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে যে খবর সামনে আসছে, তা এক কথায় ভয়াবহ।
তাদের দাবি, বিক্ষোভের জেরে ইতিমধ্যেই শাসকদলের এক পার্লামেন্ট সদস্যের (MP) মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, বেছে বেছে শাসকদলেরই নেতা ও মন্ত্রীদের বাড়িতে হামলা শুরু করেছে উন্মত্ত জনতা। একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন হামলায় দিশেহারা পুলিশ প্রশাসন। শিকেয় জরুরি অবস্থা!
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সরকারবিরোধীদের বিরোধিতায় পালটা পথে নামেন শাসকদলের অনুগামীরা। দুপক্ষ মুখোমুখি হতেই পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। শুরু হয় সংঘর্ষ।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই এমন ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে একটি জায়গায় সংঘর্ষ চলাকালীনই সেখানে পৌঁছে যান মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যরা। তাঁদের দেখে আরও ক্ষেপে যায় মারমুখী জনতা। হামলার শিকার হতে হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরও।
অন্য একটি ঘটনায় মারমুখী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নিজের আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়েন শাসকদলের MP অমরকীর্তি আথুকোরালা। এতে দুজন সরকারিবিরোধী বিক্ষোভকারী জখম হন।
কিন্তু, এরপরই ওই মন্ত্রীকে নিহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মনে করা হচ্ছে, সংঘর্ষের মাঝে পড়েই প্রাণ গিয়েছে তাঁর। সূত্রের খবর, এদিন কলম্বো-সহ দেশের নানা প্রান্ত থেকেই লাগাতার সংঘর্ষের খবর এসেছে। তাতে কমপক্ষে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা অন্তত ১৩৯।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিক্ষোভকারীরা MP-এর গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করছিলেন। তাতেই নকি মেজাজ হারান অমরকীর্তি। সটান বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়তে শুরু করেন তিনি।
যে দুজন গুলিতে জখম হয়েছে, তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, জনপ্রতিনিধির এমন আচরণেই আরও আক্রমণাত্মক হয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। তার জেরেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে বাঁচতে দৌড়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ারও চেষ্টা করেন অমরকীর্তি। পরে সেই জায়গা থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, মাহিন্দা রাজাপক্ষ প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার পরই তাঁর দফতরের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করা হয়। তারপর দেশজুড়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
বিভিন্ন জায়গায় বেছে বেছে শাসকদলের নেতা, মন্ত্রী ও MP-দের বাড়িতেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই এমন ঘটনার একাধিক ছবি ও ভিডিয়ো টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের বাগে আনতে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনীকে। সূত্র: এই সময়