মাঠের লড়াইয়ে যেমন ছিলেন মোশাররফ রুবেল

একসময় বল হাতে ঘূর্ণি জাদুতে প্রতিপক্ষকে নাকানিচুবানি খাওয়াতেন। সেটা বন্ধ ছিল তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে। মাঠ নয়, তাকে লড়তে হয়েছে মৃত্যুর সঙ্গে। ২০১৯ সালের মার্চে ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে তার, সেটা একসময়ে ক্যানসারে রূপ নেয়। প্রাণঘাতী অসুখের কাছে হার মেনে চিরবিদায় নিলেন মোশাররফ হোসেন রুবেল।

২০০১-০২ মৌসুমে ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল মোশাররফ রুবেলের। জীবনের শেষ ক্রিকেট ম্যাচ খেলেন ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে। ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ওই ম্যাচে ১ উইকেটও নেন।

পরের মাসে ধরা পড়ে ব্রেন টিউমার। আর মাঠে ফেরা হয়নি। একের পর এক অস্ত্রোপচার আর কেমোথেরাপির ধকল সামাল দেওয়ার লড়াইয়ে টিকতে পারলেন না মোশাররফ রুবেল। মাত্র ৪০ বছর বয়সে অচিন দেশে পাড়ি দিলেন এই স্পিনার।

২০০৮ সালে জাতীয় দলে অভিষেক মোশাররফ রুবেলের। দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে খেলে ১ উইকেট পান। দল থেকে অতি দ্রুত বাদ পড়েন। এরপর তাকে ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে নিয়েছিল দল। কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেয়ে আবার বাদ পড়েন।

২০১৬ সালে আফগানিস্তান সিরিজে তাকে দলে নেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। আট বছর পর জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নেমে ৩ উইকেট পান। দলকে জেতাতে বড় ভূমিকাও রাখেন তিনি। কিন্তু পরের ম্যাচে উইকেট না পাওয়ায় রুবেল আবার জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। ফলে তার ক্যারিয়ার সেখানেই থেমে যায়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোনের হয়ে নিয়মিত খেলেছেন মোশাররফ হোসেন রুবেল। দুবার ওয়ালটনকে বিসিএলের শিরোপা জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। কখনো আন্তর্জাতিক টেস্ট কিংবা টি-টোয়েন্টি খেলা হয়নি মোশাররফ রুবেলের। ৫ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৪ উইকেট। প্রথম শ্রেণিতে খেলেছেন ১১২ ম্যাচ, দুটি সেঞ্চুরি ও ১৬টি হাফ সেঞ্চুরিতে রান ৩৩০৫ এবং বল হাতে উইকেট ৩৯২টি।

চার উইকেট ১৭ বার এবং ১৯ বার পাঁচ উইকেট। ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনবার। ১০৪টি লিস্ট এ ক্রিকেট ম্যাচ খেলে ১৭৯২ রান করার পাশাপাশি উইকেট নিয়েছেন ১২০টি। আর সংক্ষিপ্ত সংস্করণে খেলেছেন ৫৬ ম্যাচ, উইকেট ৬০টি।