ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ৪৮ দিন আগে আক্রমণ শুরু করেছিল এবং এরপর থেকে তারা (রুশ সেনারা) ‘অপূরণীয় ক্ষতির’ সম্মুখীন হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) রাতে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় তিনি এই দাবি করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘আপনার কি মনে আছে রাশিয়া কিভাবে গর্ব করেছিল যে তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কিয়েভ দখল করবে? কার্যত এই ৪৮ ঘণ্টা ৪৮ দিনে পরিণত হয়েছে এবং আফগানিস্তানে দশ বছরের যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের চেয়েও এই সময়কালে বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রাশিয়া।’
বিবিসি বলছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরুর পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ আক্রমণ করার বিষয়ে রাশিয়ার যে প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল তার রুশ সৈন্যদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে স্থবির হয়ে পড়ে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের ছোট সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা ও প্রতিরোধের শক্তিকে অবমূল্যায়ন করেছিল রাশিয়া।
অন্যদিকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের সময় রাশিয়াও তাদের মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে সংগ্রাম করেছে। রুশ সামরিক বাহিনীর সাঁজোয়া যানের বহরগুলোর জ্বালানি এবং সেনাদের খাদ্য ও গোলাবারুদ শেষ হয়ে গেছে। অনেক যানবাহন ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং পরিত্যক্ত হিসেবে ফেলে যাওয়া হয়েছে। পরে সেগুলো ইউক্রেনীয় ট্রাক্টর দিয়ে টেনে নেওয়া হয়েছে।
বিবিসি বলছে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের চারপাশ থেকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে এবং এখন পূর্বাঞ্চলীয় দোনেতস্ক ও লুহানস্কে রুশ সেনাদের জড়ো করা হচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের কর্মকর্তা মিখাইলো পোদোলিয়া বলেছেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী প্রধান দক্ষিণ বন্দর শহরে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী মারিউপোলে আটকা পড়েছে।
টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তিনি আরও বলেন, আমাদের সৈন্যরা মারিউপোল শহরে আটকা পড়ে আছে এবং সরবরাহের সমস্যায় ভুগছে। চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, মার্চের শুরু থেকেই মারিউপোল শহরটি রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর তীব্র হামলা ও অবরোধের মুখে রয়েছে।