প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কোরেশি এবং পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ। শাহবাজ বিরোধীদলীয় জোটের প্রার্থী। আর মাহমুদ কোরেশি ইমরান খানের দল পিটিআই সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর দুইটাই জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু হবে। খবর- দ্য ডনের। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শাহ মাহমুদ কোরেশি জাতীয় পরিষদ সচিবালয়ে চারটি ফরম জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে, শাহবাজ শরিফ জমা দিয়েছেন ১৩টি ফরম।
আজ সকালে পিটিআই-এর কানওয়াল শাহজাব ও জেইন কোরেশি সংসদ ভবন থেকে মাহমুদ কোরেশির পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। সে সময় কানওয়াল গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, পার্টির নীতিনির্ধারণী কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে ফরম জমা দেয়া হবে।
এর আগে জাতীয় পরিষদ সচিবালয় থেকে আজ স্থানীয় সময় দুপুর দুইটার মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছিল। বিকেল তিনটা থেকে ফরম যাচাইবাছাই শুরু হবে বলে জানানো হয়েছিল।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান। ৩৪২ আসনের পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ১৭৪টি। তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে দরকার ছিল ১৭২ ভোট। ইমরানের ক্ষমতা হারানোর মধ্য দিয়ে পতন হয়েছে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারেরও। এ জন্য নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে হচ্ছে।
এই প্রথম দেশটির কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খান অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হলেন। এর আগে ১৯৮৯ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো ও ২০০৬ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব তোলা হয়েছিল। তবে উভয়েই সেই ভোটে জিতে ক্ষমতায় টিকে গিয়েছিলেন।
ইমরান খান ২০১৮ সালে সামরিক সাপোর্টে ক্ষমতায় এসেছিলেন। পারমানবিক শক্তিধর দেশটির ক্ষমতায় তিন বছর তিনি ছিলেন। সম্প্রতি তার জোটের সদ্যরা তাকে ত্যাগ করলে তিনি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারান। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সামরিক সমর্থন হারানোরই নামান্তর।
৭৫ বছরের ইতিহাসে প্রায় অর্ধ শতাব্দীই সামরিক শাসন চলেছে পাকিস্তানে। এখনো পর্যন্ত দেশটির কোনো নির্বাচিত সরকার তার মেয়াদ পূরণ করতে পারেনি।