কাতার সেনাবাহিনীতে বাংলাদেশি হাসানুর

প্রবাসেও অদম্য বাংলাদেশি তরুণ হাসানুর (২৪)। দেশের সীমানা পেরিয়ে রেখেছেন মেধার স্বাক্ষর। প্রবাসে সেনাবাহিনীতে যোগদানের মাধ্যমে নতুন এক স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছে তার। সম্প্রতি পারস্য উপসাগরীয় দেশ ‘কাতার’-এর সেনাবাহিনীর ইমেরি এয়ারফোর্সে সৈনিক হিসেবে যোগদান করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই যুবক। গত ১৩ ডিসেম্বর যোগদান করেন তিনি। হাসানুর রহমান সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার টেক কামালপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। প্রায় চার মাস আগে হাসানুর ওই পদে যোগদান করেছেন। গত ২৪ মার্চ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।

কথা বলে জানা যায়, তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। বাবা হাবিবুর রহমান প্রায় ৩০ বছর ধরে কাতার প্রবাসী। পরিবারের বড় ছেলে হাসানুরের ইচ্ছা ছিল, পড়ালেখা শেষে দেশেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। উপজেলা সদরের জমির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সিলেট শাহজালাল সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

এক পর্যায়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে অ্যাডমিশন নেন সিলেটের একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইচ্ছা অনুযায়ী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পেয়ে পড়ালেখায় মনোবল হারান তিনি। বিষয়টি জেনে প্রায় চার বছর আগে কাতার প্রবাসী পিতা হাবিবুর রহমান ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় হাসানুরকে নিজের কাছে নিয়ে যান। কাতারের রাজধানী দোহায় বসবাসের পাশাপাশি সেখানে প্রথম দিকে কিছুদিন নেপাল এজেন্সিতে কাজ করেন এবং আরও কিছুদিন গাড়িও চালান হাসানুর। পরে কাতার সেনাবাহিনীর একটি অংশ ‘ইমেরি এয়ারফোর্স’-এ সোলজার পদে চাকরির জন্য মেডিকেল পরীক্ষা দেন তিনি।

প্রথমবার ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় বার মেডিকেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ঠিকই। পিতার প্রচেষ্টা ও নিজের যোগ্যতায় কাতার সেনাবাহিনীর একটি অংশ ‘ইমেরি এয়ারফোর্স’-এ সোলজার পদে চাকরি হয় হাসানুরের। এরপর শুরু হয় প্রশিক্ষণ। টানা তিন মাস প্রশিক্ষণ শেষে নিয়মিত সৈনিক হিসেবে যোগ দেন তিনি। হাসানুর রহমান বলেন, স্বদেশ কিংবা বিদেশ হোক, পড়ালেখার কোনো বিকল্প নেই। প্রবাসে এসে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ভালো করে টের পাচ্ছি। তার এই সাফল্যে পরিবার-আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। খুশি এলাকাবাসীও।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন