ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে রাশিয়ার বিরোধিতা না করে ভুল করছে ভারত এবং চীন আক্রমণ করলে ভারতকে বাঁচাতে এগিয়ে আসবে না রাশিয়া বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপনিরাপত্তা-বিষয়ক উপদেষ্টা দিলীপ সিং।
গত বুধবার দুই দিনের সফরে ভারত আসেন দিলীপ সিং। তিনি বেইজিং ও মস্কোর মধ্যে ‘সীমাহীন’ অংশীদারি সম্পর্কের উল্লেখ করে বলেন,‘রাশিয়ার বিরোধিতা না করে ভুল করছে ভারত। যদি চীন আবার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে, তবে রাশিয়া যে ভারতকে সাহায্য করবে, এ আশা যেন না করা হয়। বিপদে পড়লে ভারতকে বাঁচাতে আসবে না রাশিয়া।’
এ ছাড়া ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক করার পর তিনি জানিয়ে দেন, রাশিয়ার কেন্দ্রিয় ব্যাংকের সঙ্গে ভারত বা অন্যান্য কোনো দেশ আর্থিক লেনদেনে জড়াক, তা চায় না আমেরিকা।
সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছিলেন, রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ক ‘শর্তহীন’। সেই কথার রেশ টেনে দিলীপ বলেছেন,‘চীন যদি ভারত আক্রমণ করে, তাহলে রাশিয়া ভারতকে বাঁচাতে আসবে না।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযানের পর রাশিয়ার ওপর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ থেকে বিরত রয়েছে ভারত। উল্টো, ডিসকাউন্টে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে ভারত।
এই ধরনের পরিস্থিতিকে আমেরিকা ভালোভাবে নেবে না বলে জানিয়েছেন দিলীপ সিং। তিনি আরও বলেছেন,‘কোনো দেশ যেন রাশিয়াকে আর্থিকভাবে সমর্থন না করে, সে রকম একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে চাই আমরা। যদি কেউ রাশিয়ার পাশে দাঁড়ায়, তাহলে তার ফলাফলও ভুগতে হবে সেই দেশকে।’
তবে রাশিয়াকে সমর্থনের পরিণতি কী হতে পারে সে বিষয়ে কিছু বলেনননি দিলীপ সিং।
ভারতের প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে বেশির ভাগ অস্ত্র কেনা হয় রাশিয়া থেকে। ভবিষ্যতে অস্ত্র ইস্যুতে ভারতের পাশে দাঁড়াতে চায় আমেরিকা বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ভারত সফরে আসেন। গতকাল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন সের্গেই ল্যাভরভ।
পরে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি ল্যাভরভ বলেন,‘ভারত আমাদের অবস্থান জানে। আমাদের লুকানোর কিছুই নেই। ইউক্রেন প্রশ্নে ভারত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বাস্তবতার ওপর নির্ভরশীল। সেই সিদ্ধান্ত তারা কোনো কিছুতে প্রভাবিত হয়ে নেয়নি। একতরফাভাবেও নেওয়া হয়নি। এটা প্রশংসার যোগ্য।’
জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন ল্যাভরভ। তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক বার্তা মোদির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।
ল্যাভরভের ভারত সফরকে কেন্দ্র করে কড়া বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। রাশিয়া থেকে ভারত যেন জ্বালানি বা অন্যান্য সামগ্রী আমদানি না করে, তা নিয়েও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি