দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা চরম এক সংকটকাল অতিক্রম করছে। দেশটিতে এখন তীব্র জ্বালানী তেল ও খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ঠিক নেই। ক্রমবর্ধমান তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের ফলে দেশটির সর্বত্র এখন শুধু হাহাকার।
এসবের মধ্যে দেশটির জনগণকে ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই পুরনো আমলে ফিরছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। এখন দেশটির নাগরিকরা কাপড় ইস্ত্রি করার জন্য পুরনো পদ্ধতিতে কাঠকয়লার আয়রন মেশিন ব্যবহার করছে। পাশাপাশি অন্ধকার দুর করতে ব্যবহার হচ্ছে কেরোসিনের বাতি।
শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক দ্যা আইল্যান্ড-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, জ্বালানী সংকটের কারণে দেশটিতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, গ্যাস ও পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশচুম্বী দাম বেড়েছে। হ্যাটনের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ বছর পর হঠাৎই বেড়ে গেছে কেরোসিনের বাতি ও কাঠকয়লার আয়রনের দাম।
একটি কাচের চিমনির দামে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫০০ শ্রীলঙ্কান রুপী। আর কাঠকয়লার আয়রন মেশিন বিক্রি হচ্ছে ৯০০ রুপীতে। হারিকেনের চাহিদাও বেড়েছে। স্থানীয় বাজারে সরবরাহের অভাবে পণ্যটির সংকটও তৈরি হয়েছে। শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি দেশটির অর্থনীতি।
উল্লেখ্য, অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শ্রিমাল আবিরত্নে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে বলেন, কিছু বড় বড় প্রকল্প শ্রীলঙ্কার জন্য ‘শ্বেতহস্তীতে’ রূপান্তরিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাম্বানটোটা সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর।