আতঙ্ক বাড়িয়ে ইউক্রেনে হাজির ভয়ঙ্কর ‘ওয়াগনার গ্রুপ’

শীঘ্রই রাজধানী কিয়েভের দখল নেওয়ার ইচ্ছা রাশিয়ার। তবে ইউক্রেন সেনার প্রতিরোধের মুখে কিয়েভ দখলের অদম্য ইচ্ছায় তাই আরও এক ধাপ এগিয়ে পদক্ষেপ করলো রাশিয়া। কিয়েভকে আরও বিপদের মুখে ফেলতে মাঠে নামছে ভয়ঙ্কর ‘ওয়াগনার গ্রুপ’, যা ‘পুতিনের নিজস্ব সেনা’ নামেও পরিচিত। ওয়াগনার গ্রুপ একটি স্বনিয়ন্ত্রিত সামরিক বাহিনী।

এই বাহিনীর বিরুদ্ধে সারাবিশ্ব জুড়ে ধ’র্ষ’ণ, ডাকাতি, খু’ন এবং যু’দ্ধাপ’রাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ওয়াগনার বাহিনীকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এবং ক্লিটসকো ভ্রাতৃদ্বয়সহ অন্য বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের হত্যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে ক্রেমলিনের সঙ্গে ওয়াগনার বাহিনীর ৬০০ ভাড়াটে যোদ্ধার সম্পর্কের জল্পনা অস্বীকার করেছে রাশিয়া।

তবে পশ্চিমী দুনিয়ার দাবি, রাশিয়ার বিভিন্ন গোপন কা়জ উদ্ধারের দায়িত্ব দেওয়া আছে এই বাহিনীর উপর। দীর্ঘ দিন ধরে এও দাবি করা হয়েছে যে ওয়াগনার গ্রুপ পুতিনের ব্যক্তিগত বাহিনী যারা কেবলমাত্র পুতিনের নির্দেশই অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও ওয়াগনার বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেন, সিরিয়া, লিবিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, সুদান এবং মোজাম্বিকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।

পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে অস্ত্র সরবরাহ এবং সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য এই বাহিনীকে কাজে লাগানো হত বলেও জানা গিয়েছে। অলিগার্চ ইয়েভজেনি প্রিগোজিন এই ওয়াগনার বাহিনীতে নতুন সদস্য নিয়োগের দায়িত্বে আছেন। অলিগার্চ পুতিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত। তিনি ক্রেমলিনের বিশেষ বিশেষ কাজ দেখাশোনার কাজেও যুক্ত। তার কেটারিংয়ের ব্যবসাও আছে। সেই কারণে অলিগার্চ ‘পুতিনের রাঁধুনী’ বলেও পরিচিত।

জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগেই তাকে ক্রেমলিনে তলব করা হয়। এর আগে বিশেষ অভিযান চালানোর জন্য এই বাহিনীকে পূর্ব আফ্রিকায় মোতায়েন করে ক্রেমলিন। যদিও এর দায় বরাবরই এড়িয়ে গিয়েছে রাশিয়া। এই বাহিনীর অস্তিত্ব নিয়ে বহু জল্পনা থাকলেও ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে এই গোষ্ঠীর কার্যকলাপ প্রথম প্রকাশ্যে নজরে আসে। প্রাথমিক ভাবে, রাশিয়ার কয়েকশো অভিজ্ঞ সেনা নিয়ে এই বাহিনী গঠিত হয়েছিল।

শোনা যায়, ডনবাসের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা ক্রেমলিনের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করলে তাদের হত্যা করার জন্য এই বাহিনীকে পাঠানো হয়। তবে ওয়াগনার নয়, এই হত্যাকাণ্ডের দায় চাপে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর উপরই। ওয়াগনারের প্রতিষ্ঠাতা ও নেতা দিমিত্রি উটকিন, রাশিয়ার বিশেষ বাহিনী স্পেটসনাজ-এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল ছিলেন।

পুতিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সিরিয়ার আন্দোলকারীদের দমন করতেও তিনি এই ওয়াগনার বাহিনীকে কাজে লাগিয়েছিলেন। শোনা যায়, একসময় ওয়াগনার বাহিনী এতটাই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে যে রুশ সরকারও তাদের অর্থ দিতে অস্বীকার করে। এর পরে পুতিন অলিগার্চকে এই গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণে নিযুক্ত করেন। তবে অনেকের মতে ক্রেমলিনের সঙ্গে ওয়াগনার বাহিনীর যোগসূত্র নিছকই কল্পনা।