যে কারণে থেমে যায় ৪০ মাইল দীর্ঘ রুশ সেনাবহর

রাশিয়ার ৪০ মাইল দীর্ঘ একটি সেনাবহর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে এগিয়ে আসছে- চার দিন আগে স্যাটেলাইট ছবিসহ এমন একটি খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। পশ্চিমা সমরবিদদের হিসেব অনুযায়ী বহরটি এতদিনে কিয়েভে পৌঁছে যাওয়ার কথা। তবে রাজধানী থেকে ৩০ মাইল দূরে থাকতে সেই বহরটি থমকে গিয়েছিল। যার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে চমকপ্রদ তথ্য পেয়েছেন পশ্চিমা সেনা গোয়েন্দারা।

গোয়েন্দারা বলছেন, রুশ বাহিনীর হানা ঠেকাতে ‘পোড়ামাটি (স্কর্চড আর্থ) যুদ্ধকৌশল নিয়েছে ইউক্রেনের সেনারা। ‘শক্তিশালী শত্রুসেনার অগ্রগতি ধীর করাই ‘পোড়ামাটি নীতি’র মূল কথা। পিছু হঠার সময় রাস্তা, সেতু, সম্ভাব্য বাসস্থান এবং রসদের উৎস নষ্ট করে দেওয়া তার অন্যতম অঙ্গ। আর সে কাজটিই করেই রুশ বহরকে থামিয়ে দিয়েছিল ইউক্রেনের সেনারা।

সিএনএনের তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ৩০ মাইল দূরে অবস্থিত তেতেরিভ নদীর ওপর থাকা একটি ব্রিজ ধ্বংস করে দেয় ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর সেনারা। রাশিয়ানরা যখন ইউক্রেন হা’মলা করে তখন অবস্থার ভয়াবহতা বুঝতে পেরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ব্রিজটি ধ্বংস করা হয়। এ ব্রিজটি ধ্বংস করে দেওয়ার কারণেই রাশিয়ানরা পরিকল্পনা অনুযায়ী কিয়েভের দিকে এগুতে পারেনি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা।

এর আগেও ইউক্রেনের খারসন শহরে স্কর্চড আর্থ কৌশল অবলম্বন করে ইউক্রেনের সেনারা। রুশ নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়া থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে এক ব্রিজ। রুশ হা’মলার প্রথম দিন পিছু হঠার সময় ওই ব্রিজটি ধ্বংস করতে নিজেকেই উড়িয়ে দেন এক ইউক্রেনীয় সেনা। ভিটালি সাকুন ভোলোডিমিরোভিচ নামে ওই সেনাকে জাতীয় বীর বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

এদিকে ওই সেনাবহর থমকে যাওয়ার পেছনে রাশিয়ান সেনাদের ওপর বিভিন্ন জায়গায় ইউক্রেনের সেনাদের হা’মলাকেও কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। তার বলছেন, নানামুখী হা’মলার কারণেও রাশিয়ানরা খুব বেশি দূর আগাতে পারেনি। ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্রিজ, সরাসরি আক্রমণের পাশাপাশি জ্বালানি ও খাবারের সংকটও রাশিয়ানদের অগ্রসর থামিয়ে দিয়েছে।

এরপর অবশ্য পরিস্থিতি সামলে নিয়েছে রুশ বাহিনী। বিভিন্ন বাধাপ্রাপ্ত হলেও ধীরে ধীরে এগুচ্ছে কিয়েভের দিকে। রাজধানী থেকে বর্তমানে ১৫ মাইল দূরে অবস্থান করছে রাশিয়ার ৪০ মাইল দীর্ঘ সামরিক বহরটি। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা রাশিয়া এখন তাদের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনছে।পুনরায় একত্রিত হচ্ছে। হয়ত শিগগির ভয়াবহ হা’মলা শুরু করবে।