লক্ষ্যটা কঠিন ছিল। জিততে হলে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকাকে করতে হতো ১৭৬ রান। এই কঠিন লক্ষ্য তাড়ায় ঢাকাকে কোনো রকম চাপেই পড়তে দেননি তামিম ইকবাল। তুলে নেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। ব্যাট হাতে উপহার দেন ১১১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। তাঁর সঙ্গে দারুণ করেন মোহাম্মদ শেহজাদ। দুই ওপেনারের ব্যাটিং ঝড়ে সিলেট সানরাইজার্সকে সহজেই হারিয়েছে মিনিস্টার ঢাকা।
আজ শুক্রবার নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে সিলেটের বিপক্ষে ১৮ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটে জিতেছে মাহমুদউল্লাহর ঢাকা। চার ম্যাচে এই নিয়ে দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল ঢাকা। ৬৪ বলে ১১১ রানের ইনিংস উপহার দেন তামিম ইকবাল। তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৭ বাউন্ডারি ও চার ছক্কা দিয়ে। একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন সিলেটের ওপেনার সিমন্স। জোড়া সেঞ্চুরির ম্যাচে জয়ের হাসি হেসেছে ঢাকা।
১৭৬ রান তাড়া করতে নেমে ঢাকাকে চমৎকার জুটি উপহার দিয়েছেন দুই ওপেনার তামিম ও শেহজাদ। ইনিংসের শুরু থেকেই নির্ভার ছিলেন গতকাল আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিরতি নেওয়া তামিম। সিলেটের বোলারদের পাত্তা না দিয়ে ঝড় তুলেছেন সাগরিকায়। মাত্র ২৮ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি।
এরপর এগিয়ে যান সেঞ্চুরির পথে। পুরো সময় তাঁকে দারুণভাবে সঙ্গ দেন শেহজাদ। নির্ভার তামিম হেসেখেলেই দলকে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। এই পথে তুলে নেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। ২৮ বলে হাফসেঞ্চুরি করা তামিমের সেঞ্চুরি করতে লেগেছে মাত্র ৬১ বল। আলাউদ্দিন বাবুকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেছেন মিনিস্টার ঢাকার এই ওপেনার। বিপিএলে এটি তাঁর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
তামিমের সঙ্গে ৩৯ বলে ৫৩ রান করেন শেহজাদ। ওপেনিং জুটিতে দুজন মিলে করেন ১৭৩ রান। তামিমের সেঞ্চুরির দিনে ১৭ ওভারেই জয় তুলে নেয় মিনিস্টার ঢাকা।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৫ রান করেছে সিলেট সানরাইজার্স। চলমান আসরের প্রথম সেঞ্চুরি ছুঁতে সিমন্সের লেগেছে ৫৯ বল। সেঞ্চুরিয়ান সিমন্স মোট ৬৫ বলে ১১৬ রানের ইনিংস উপহার দেন সিমন্স। তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৪ বাউন্ডারি ও পাঁচ ছক্কা দিয়ে।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে সিলেট সানরাইজার্সকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও লেন্ডল সিমন্স। দুই ওপেনার মিলে শুরুর জুটিতে তোলেন ৫০ রান। ষষ্ঠ ওভারে এই জুটি ভাঙেন ইবাদত হোসেন। ফিরিয়ে দেন ১৮ রান করা এনামুলকে।
তবে উইকেটে থিতু ছিলেন আরেক ওপেনার সিমন্স। মিঠুনকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ৮ বল মোকাবিলা করে ফিরে যান মিঠুন। তবুও টিকে ছিলেন সিমন্স। ঢাকার বোলারদের তুলোধুনো করে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। তাঁর সঙ্গে বাকিরা আসা-যাওয়ার মিছিলে থাকলেও সিলেটকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে সমস্যা হয়নি সিমন্সের। তাঁর ব্যাটে চড়ে লড়াইয়ে পুঁজি পেয়ে যায় সিলেট সানরাইজার্স।
ঢাকার হয়ে বল হাতে ২৯ রান খরচায় এক উইকেট নেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। আন্দ্রে রাসেল এক উইকেট নিতে দেন ৪৫ রান। ইবাদত হোসেনও নেন এক উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট সানরাইজার্স : ২০ ওভারে ১৭৫/৫ (এনামুল ১৮, সিমন্স ১১৬, মিঠুন ৬, কোলিন ০, বোপারা ১৩, সৈকত ১৩, আলাউদ্দিন ২ ; ইবাদত ৪-০-২৯-১, মাশরাফী ৪-০-২৯-১, রাসেল ৩-০-৪৫-১, রুবেল ৪-০-৩১-০, কায়েস ৪-০-২৬-১)।
মিনিস্টার ঢাকা : ১৭ ওভারে ১৭৭/১ (তামিম ১১১*, শেহজাদ ৫৩, ইমরান ০; তাসকিন ৩-০-২৮-০, সোহাগ ৪-০-৩৬-০, আলাউদ্দিন বাবু ২-০-৩২-১, সানজামুল ২-০-২৪-০, সৈকত ২-০-২৩-০, বোপারা ৩-০-১৯-০, মুক্তার ১-০-১৫-০)।
ফল : ৯ উইকেটে জয়ী ঢাকা।