নির্বাচন পরবর্তী সরিষাবাড়ী উত্তাল, পরাজিত প্রার্থীদের পূণঃনির্বাচনের দাবী

নির্বাচন পরবর্তী জামালপুরের সরিষাবাড়ী উত্তাল। পরাজিত প্রার্থীদের পূণঃনির্বাচনের দাবীতে বিক্ষোভ এবং বিজয় মিছিলের প্রস্তুতিকালে পরাজিত প্রার্থীর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) কামরাবাদ ও ডোয়াইল ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের কান্দারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছে বলে জানাগেছে। এ ঘটনায় ২জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও ডোয়াইল ইউনিয়নের প্রধান সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ভোট কেন্দ্রের পিছনে সিল দেয়া ব্যালট পাওয়ায় নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনেছে পরাজিত প্রার্থী।

এলাকাবাসী ও বিজয়ী প্রাথীর পরিবার সুত্রে জানা গেছে, গত রোববার (২৬ ডিসেম্বর) উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের নির্বাচনে আব্দুর রউফ (মোরগ) প্রতিক ৪৭০ ভোট পেয়ে জয় লাভ করে। এলাকার ভোটারদের নিয়ে একটি বিজয় মিছিল করার জন্য কামরাবাদ ইউনিযনের কান্দার পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হতে থাকে। এ সময় পরাজিত প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন (তালা) প্রতিকের সমর্থকরা বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থদের উপর হামলা করে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী আব্দুর রউফ (৬৫), মুরাদ হোসেন (৩৭), সুজা মিয়া (৪৮), মঞ্জুরুল (৪৮), আব্বাছ আলী (৬৭), ফজলুল হক (৬৫), মোস্তাফিজুর রহমান (২৫), মনছুর আলী (৬৮), জহুরা (৫০), আল আমীন (২৫), রবিউল আসলাম (৫০), ইসমাইল হোসেন (৬০), শামছুল ইসলাম (৬৫), আনা (৪৫)সহ উভয় পক্ষের প্রায় ৪০ জন আহত হয়। গুরুতর আহতদের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ দিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনেছেন পরাজিত প্রার্থীরা। ডোয়াইল-কেন্দুয়া-তারাকান্দি প্রধান সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ কর্মসুচী পালন করেছে। নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদে এবং পূণঃনির্বাচনের দাবীতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রতিক একাত্তত্বা ঘোষনা করেন পরাজিত প্রার্থী আশিকুর রহমান ওরফে লাল মিয়া (ভ্যানগাড়ী), আব্দুল মালেক (ঘুড়ি), শফিকুল ইসলাম (টিউবওয়েল) এবং খসরু মিয়া (মোরগ)। যানচলাচলের সংবাদ পেয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মীর রকিবুল হকএর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ডোয়াইল ইউনিয়নের চাঁপারকোনা কালীতলা বাজারে হাজির হন। এসময় বিক্ষুব্ধ এলাকার নারী-পুরুষ আতঙ্কিত হয়ে অবরোধ স্থান ত্যাগ করতে গিয়ে মৌ (২৩), রাশেদা (৩২)সহ কয়েকজন আহত হয়।

এ ঘটনায় আশিকুর রহমান ওরফে লাল মিয়া (ভ্যানগাড়ী) ও আনোয়ার হোসেন বাবুকে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে।
অপর দিকে, উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের পরাজিত প্রাথী আমিনুল ইসলাম (ফুটবল), হেলাল উদ্দিন (টিউবওয়েল) এর ব্যালট পেপার ভোট কেন্দ্রের পিছনে পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় স্থানীয় ভোটাররা নির্বচনে আমিনুল ইসলাম (ফুটবল), হেলাল উদ্দিন (টিউবওয়েল) এর সিল দেয়া ব্যালট পেপার নষ্ট করে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনেছে। ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসার,সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারগন ভোট কেন্দ্রে কোন ঘোষনা না দিয়েই কেন্দ্র থেকে চলে আসার অভিযোগ এনে এবং পূণঃনির্বাচনের দাবীতে সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বালিয়া গ্রামে বিক্ষোভ কর্মসুচী পালন করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে প্রার্থী আমিনুল ইসলাম জানান, আমাকে সহ টিউবওয়েল প্রতিকের প্রার্থীকে কারচুপির মাধ্যমে ফেল করে দিয়ে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে ভোট কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষনা না দিয়েই প্রিজাইডিং অফিসারগন চলে আসে। আমি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছি। সেই সাথে প্রশাসনের কাছে পুন: নির্বাচনের দাবী জানাই ।