সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত মন্ত;ব্য করার পর হলো কল রেক;র্ড ফাঁ;স। এরপরই চারদিকে বইতে শুরু করে সমালোচনার ঝড়। এমন অবস্থায় গণমাধ্যমকে এড়িয়ে গেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান।
আজ সোমবার আসেননি সচিবালয়ে। ঘোষিত প্রোগ্রামেও যোগ দেননি তিনি। এরপর রাতে এলো মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ।
সম্প্রতি একটি ভার্চুয়াল টকশোতে নারীবিদ্বেষী মন্তব্যের জেরে অনলাইন-অফলাইনে ব্যাপক সমা;লোচিত হচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ। নারী অধিকারকর্মীদের পাশাপাশি অনেকেই বলছেন, প্রতিমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত। এছাড়া চিত্রনায়িকা মাহির সঙ্গে কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে প্রতিমন্ত্রীকে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করতে শোনা যায়।
এমন অবস্থায় সোমবার সচিবালয়ে নিজ দফতরেও আসেননি মুরাদ হাসান। বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর তোপখানা রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও আসেননি তিনি।
ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকে দিনভর একাধিকবার ফোন করা হলেও ধরেননি ডা. মুরাদ। সর্বশেষ রাত ১০টায় তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে বিকেল ৩টায় তার জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছিলেন, প্রতিমন্ত্রী বাসায় আছেন। ফোন না ধরার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে, প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাতে তাকে পদত্যাগের এ নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। কাদের জানান, আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে মুরাদ হাসানকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি একটি ভার্চুয়াল টকশোতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ডা. মো. মুরাদ হাসান। এরপর তার সমালোচনা করেন অনেকে।
এরই মধ্যে চিত্রনায়িকার মাহিয়া মাহির সঙ্গে কথোপকথনের কল রেকর্ড ফাঁস হয় এবং তা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। অডিও ক্লিপটিতে শোনা যায়, ওই নায়িকাকে তাৎক্ষণিক তার কাছে যেতে বলছেন মুরাদ। নায়িকা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী।
জানা গেছে, ওই ফোনকল করা হয়েছিল চিত্রনায়ক ইমনের ফোনে। ওই মুহূর্তে একটি সিনেমার বিষয়ে মিটিং করছিলেন ইমন ও মাহি। সঙ্গে ছিলেন পরিচালক ওয়াজেদ আলী সুমন।
এ বিষয়ে নায়ক ইমন বলেন, “কল রেকর্ডে তো পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, আমি হয়ত শুটিংয়ে ছিলাম, ব্যস্ততার জন্য তার (প্রতিমন্ত্রী মুরাদ) ফোন ধরতে পারিনি।
এ কারণে তিনি সে রাতে ফোন দিয়ে রাগারাগি করেন। ওই সময়ে আমি আর ও (নায়িকা মাহি) ‘ব্লাড’ সিনেমা নিয়ে একটা মিটিং করছিলাম পরিচালক সুমন ভাইয়ের সঙ্গে। তখন তিনি (প্রতিমন্ত্রী) আমাদের যেতে বলেন। এখন পরিস্থিতি সামাল তো দিতে হবে। আমরা তো একটা মিটিংয়ে ছিলাম। এজন্য বারবার বলছিলাম, ‘ভাইয়া দুই মিনিট, নামতেছি’।”
ইমন আরও বলেন, ‘উনার মতো একজন মন্ত্রীর সঙ্গে তো আমি খারাপভাবে কথা বলতে পারি না। আমার এখানে কী দোষ? একজন মন্ত্রী যদি ফোন দেয়, আমি কী বলতে পারি? এত বড় একজন মানুষ, আমি থতমত খেয়ে গেছি।’
ইমন জানান, এই ঘটনা ২০২০ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের। ওই রাতে মিটিং শেষ করে ইমন ও নায়িকা মাহি নিজ নিজ বাসায় চলে যান।