গত ৫৩ বছরেও একটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত কোনো নৌকার প্রার্থী জয়লাভ করতে পারেনি। ১৯৬৮ সাল থেকে ইউনিয়নটিতে ১৫ বার সাধারন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবারই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে প্রার্থী দিয়েছে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। কিন্তু সে প্রার্থী একবারও জয়লাভ করতে পারেনি। ইউনিয়নটিতে প্রতিবারই বিএনপি, জামায়াত অথবা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীই জয়লাভ করে। এবার সবশেষ ২০২১ সালের তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোকলেচুর রহমান শিলন নির্বাচিত হয়েছেন। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের অতীতের তথ্য থেকে এমনটিই জানা গেছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু।
তথ্য বলছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়ন পরিষদে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬৮ সালের ২৬ জুলাই। সেসময় মকবুলার রহমান নির্বাচিত হন। এরপর তিনি ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে শরাফত হোসেন, দৌলতুল ইসলাম, নিরঞ্জন কুমার বিশ্বাস, আবার দৌলতুল ইসলাম, ঈবনে সাঈদ কচি, দৌলতুল ইসলাম ও ঈবনে সাঈদ কচি ২০০১ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সেলিমা মিয়া জয়লাভ করেন।
তিনি ২০০৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ২০০৩ থেকে ২০১১ পর্যন্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান বিএনপির প্রার্থী আসিরুল ইসলাম সেলিম। এরপর ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত আবার চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ পান বিএনপি মনোনীত আরেক নেতা আমিনুল হক রোকন। সবশেষ ২০২১ সালের চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে (২৮ নভেম্বর) নৌকার প্রার্থী হাসান উজ্জামান হান্নানকে হারিয়ে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোকলেচুর রহমান শিলন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মনোনীত কোন প্রার্থী জেহালা ইউনিয়ন থেকে জয় পাইনি। এ ইউনিয়নটিতে মূলত বিএনপি, জামায়াত, অন্যান্য দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়ের তালিকাই বেশী। আওয়ামী লীগের পরাজয়ের কারণ উল্লেখ করে দলটির উপজেলার সভাপতি হাসান কাদির গনু বলেন, ‘জেহালা ইউনিয়নে বিএনপি জামায়াতের আধিপত্যই বেশী। যার প্রভাব পড়ে নির্বাচনের ওপর। এ সুযোগে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীর খোলসের একটি অংশ ওই বিএনপি জামায়তের কাছ থেকে সুবিধা পেয়ে থাকে। যার কারণেই মূলত জেহালায় আওয়ামী প্রার্থী পরাজয় বরণ করেন।’