মার্কিন কূটনীতিকদের চাপের মুখেও নমনীয় হলেন না সৌদি যুবরাজ সালমানঃ ব্লুমবার্গ

গত ৩০ বছরের মধ্যে আমেরিকার মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ আকার ধারণ করেছে। বিশ্বের এই ক্ষ্মতাধর দেশটিতে ধনী ও গরীবের মধ্যে বিভেদ বাড়ছে। দিনদিন বাড়ছে পেট্রোলের মূল্য। রাজনৈতিকভাবে হোয়াইট হাউসের জন্য তেল একটি বি;ষা’ক্ত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে গভীরভাবে হতাশ হবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

এরই মধ্যে পৃথিবীর অন্যতম তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরব জো বাইডেনকে এড়িয়ে চলছে বলে আমেরিকান সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত অক্টোবরে জো বাইডেন জানিয়েছিলেন, রাশিয়া এবং সৌদি আরবের মতো প্রধান তেল উৎপাদক দেশগুলো যে আরও তেল উত্তোলন করছে না এই বিষয়টি একদমই ঠিক হচ্ছে না।

এই বিষয় নিয়ে অবশ্য প্রথমে ব্যক্তিগতভাবে পরে প্রকাশে মার্কিন কূটনীতিকরা সৌদি আরবকে আরও তেল উত্তোলনের ব্যাপারে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। সৌদি এবং মার্কিন, দুপক্ষের কর্মকর্তারাই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কূটনৈতিক চাপটি শেষ পর্যন্ত ৩৬ বছর বয়সী একজনের দিকে যাচ্ছিল, যার রয়েছে তেলের মূল্য পরিবর্তন করার ক্ষমতা এবং যার ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে ভোক্তা দেশগুলোর রাজনীতিবিদদের ভাগ্য; তিনি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।

তবে মার্কিন কূটনীতিকদের চাপের মুখেও নমনীয় হননি তিনি। প্রিন্স সালমান ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক চাহিদার চেয়ে তেলের সরবরাহ ও চাহিদার মতো মৌলিক বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তিত।

তবে বাইডেন যদি সস্তায় পেট্রোল চাইতেন, তাহলে তাকে ক্রাউন প্রিন্সের চাহিদার তালিকাও পূরণ করতে হতো। প্রিন্স সালমানের চাহিদার মধ্যে এমন বিষয় রয়েছে যা তিনি বাইডেন প্রশাসনের তরফ থেকে পাননি। হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি প্রিন্স সালমানের সঙ্গে।

ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বাইডেন প্রিন্স সালমানের বাবা কিং সালমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাইডেন সরাসরি ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে কোনো চুক্তিতে যেতে অস্বীকার করেছেন বলে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে।

২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাশোগিকে হ;ত্যা’র পর থেকে প্রিন্স সালমানকে এখনও আমেরিকায় একজন আগন্তুক হিসেবে মনে করা হয়।

বাইডেনের কথাতেও এর ইঙ্গিত মিলেছে। গত অক্টোবরে কারো নাম উল্লেখ না করে বাইডেন জানিয়েছিলেন, মধ্যপ্রাচ্যের অনেকেই আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। তবে তাদের সঙ্গে কথা বলল কী না সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।

এই কারণে স্বভাবতই বাইডেন অতিরিক্ত তেল পাননি। বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার দেশের তেল মজুদে হাত দিতে হয়েছে বাইডেন প্রশাসনের।

যদিও বাইডেন প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হচ্ছে তেলের দাম কমাতে নিজেদের মজুদ থেকে তেল বাজারে ছাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র।