ঢাকার ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে এক কাউন্সিলরকে ৫০০ লোকসহ একটি কেন্দ্রে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সাভার পৌর সভার মেয়র আব্দুল গণি। নির্দেশপ্রাপ্ত কাউন্সিলরের নাম রমজান আলী। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) থেকেই এমন একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ তার কর্মী সমর্থক ও সাধারণ ভোটাররা।
জানা গেছে, সোমবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কুল্লা ইউনিয়নের মামুরা গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে একটি প্রচার সভায় এমন নির্দেশ দেন সাভারের মেয়র আব্দুল গণি। সভার ভিডিওতে দেখা যায়, ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী কালীপদ সরকারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার গিয়েছেন পার্শ্ববর্তী সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গণি ও তার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমজান আলী।
এসময় মেয়র গণি বলেন, অনেকে আওয়ামী লীগ করে। আবার অনেকে আওয়ামী লীগ করে দলের সঙ্গে বেইমানী করে। এই সমস্ত বেইমানদের স্থান কোথায় হবে তা বুঝতে পারবেন নির্বাচনের পরে। যারা এতোদিন, এই ১৫ বছর সুযোগ নিয়েছে আর এখন বেইমানি করছে, তাদের চরম মূল্য দিতে হবে। মেয়র আরও বলেন, আমি কুল্লায় ঘুরছি, দেখছি কে কে কি করছে। আমি আমার পৌরসভা থেকে এই এলাকায় কিছু লোক সেটিং করছি।
এ ছাড়া যাদের প্রতি সন্দেহ আছে, তাদের এক্টিভিটি দেখছি। এগুলা খুঁজে দেখবো। ব্যবস্থা নেব। ভোটের দিন সবাই কেন্দ্রে আসবেন। ভোট দিবেন। পৌরসভা থেকে রমজানের (১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সাভার) নেতৃত্বে, ওকে আমি দায়িত্ব দিয়েছি। ও ৫০০ লোক নিয়ে থাকবে। আপনারা ভোট দেবেন। সঙ্গে সঙ্গে কাউন্সিলে রমজান আলীকে উঠে দাঁড়িয়ে মেয়রের কথায় সমর্থন দিতে দেখা গেছে ভিডিওতে।
বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন কুল্লা ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফর রহমান৷ তিনি বলেন, এই বক্তব্যটি একটি উষ্কানি মুলক বক্তব্য। মানুষকে একটা ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমাদের পুলিশ ও প্রশাসন আছে তারাই দেখবেন বিষয়টি। আমরা চাই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হোক৷ তিনি আরও বলেন, একটা কেন্দ্রে যদি ৫০০ লোক বাইরে থেকে আসে তাহলে সেই কেন্দ্রের অবস্থা কি হবে? চিন্তা করা যায়?
মানুষতো ভোটই দিতে যাবে না তাহলে৷ আমি বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত। আমি নির্বাচন কর্মকর্তা ও পুলিশে কাছে অভিযোগ দেবো। ভিডিওটিতে মেয়র আব্দুল গণির ৫০০ লোক নিয়ে যাওয়ার স্পষ্ট নির্দেশনামূলক বক্তব্য থাকলেও এ বিষয়ে জানতে ফোন করলে তিনি এমন বক্তব্য দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। মেয়র আব্দুল গণি বলেন, না না আমি এমন বক্তব্য কখন দিলাম। আর ওরে (কাউন্সিলর রমজান) চিনে কে। এমন কথা আমি কেন বলবো।
এ বিষয়ে জানতে সাভার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমজান আলীকে কয়েকবার ফোন করা হয়। তবে তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। এ বিষয়ে ঢাকা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মুনীর হুসাইন খান বলেন, এভাবে কেউ নির্বাচনে থাকতে পারে না। যদি অভিযোগ পাই বা এমন কেউ আসে প্রমাণ পাই। তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।